ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সরকারের একক প্রচেষ্টায় শিশুশ্রম নিরসন সম্ভব নয়: শ্রম প্রতিমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩০ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২৪
সরকারের একক প্রচেষ্টায় শিশুশ্রম নিরসন সম্ভব নয়: শ্রম প্রতিমন্ত্রী

ঢাকা: সরকারের একক প্রচেষ্টায় শিশুশ্রম নিরসন সম্ভব নয়। এ জন্য সরকারের পাশাপাশি সব রাজনৈতিক দল, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও নাগরিক সংগঠনসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সম্মিলিত প্রয়াস প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী।

শনিবার (১৩ জুলাই) রাজধানীর এফডিসিতে শিশুশ্রম প্রতিরোধে করণীয় নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।  

প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সরকার শিশুশ্রম নিরসনে গৃহীত কার্যক্রম বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করছে। শিশুশ্রম নিরসনে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য না এলেও রাজনৈতিক সদিচ্ছার কোনো ঘাটতি নেই। ২০২৫ সালের মধ্যে শিশুশ্রম মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। ঠাকুরগাঁও জেলাকে দেশের প্রথম শিশুশ্রম মুক্ত জেলা হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এছাড়া রাজশাহীসহ আরও কয়েকটি জেলাকে শিশুশ্রম মুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ক্রমান্বয়ে এক বছরের মধ্যে আরও কয়েকটি জেলা ও উপজেলাকে শিশুশ্রম মুক্ত করা সম্ভব হবে।  

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, যে বয়সে শিশুদের হাতে থাকার কথা বই খাতা, সেই বয়সে অনেক শিশুকে জীবন সংগ্রামের জন্য হাতে তুলে নিচ্ছে শ্রমের হাতিয়ার। নিজের কিংবা পরিবারের দু’মুঠো খাবারের জন্য বেছে নিচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। এদের মধ্যে অনেকেই ওয়েল্ডিং, লোহা—ইস্পাত ঝালাই, মোটরগাড়ির ওয়ার্কশপ, জুতার কারখানা, বিড়ি তৈরি, টেইলারিংসহ বিভিন্ন অতি ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছে। এমনও দেখা গিয়েছে যে কোমল দুটি হাতে বই থাকার কথা সেই দুটি হাত দিয়ে রিকশা  বা ভ্যান চালাচ্ছে। টেম্পুর হেলপারী করছে। মাথায় করে ইটের বোঝা বহন করছে। আমাদের আইনে শিশুশ্রম নিমূর্লে নানা পদক্ষেপের কথা বলা থাকলেও তা পুরোপুরি বাস্তবায়িত হচ্ছে না। যদি আমরা ২০২৫ সালের মধ্যে শিশুশ্রম নিরসন করতে ব্যর্থ হই, তাহলে এসডিজির গোল আট অর্জন হবে না। শিশুশ্রম নিরসনে সরকারি সংস্থাগুলো ও এনজিও’র মধ্যে সমন্বয়ের ঘাটতি রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে।  

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব হোসেন। ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে শিশুশ্রমের মূল কারণ কেবল দারিদ্র্য নয় শীর্ষক ছায়া সংসদে কবি নজরুল সরকারি কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজের বিতার্কিকরা চ্যাম্পিয়ন হয়।  

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক মো. আব্দুর রহিম খান, আইএলও বাংলাদেশ এর অফিসার ইনচার্জ নীরান রামজুথান এবং এডুকো বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর আব্দুল হামিদ।

প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, প্রফেসর এ কে এম মাজহারুল ইসলাম, উপসচিব রোকেয়া পারভীন জুই, শিশু অধিকার গবেষক ড. এস এম মোর্শেদ ও সাংবাদিক ঝুমুর বারী।

প্রতিযোগিতা শেষে চ্যাম্পিয়ন দলকে ৫০ হাজার ও রানারআপ দলকে ২৫ হাজার টাকাসহ ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়। প্রতিযোগিতাটির আয়োজনে সহযোগিতা করেছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, আইএলও ও এডুকো বাংলাদেশ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২৪
এমএমআই/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।