ঢাকা, বুধবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নাটোরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আ. লীগ-পুলিশের সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ১৬

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০২ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২৪
নাটোরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আ. লীগ-পুলিশের সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ১৬

নাটোর: জেলায় কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন এবং পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষে মো. ফাহাদ ইবনে জাহিদ রাহি নামে এক শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এছাড়া পুলিশ সুপার ও এক পুলিশ পরির্দশকসহ অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় তিন শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) দুপুরে শহরের মসজিদ মার্কেট এলাকায় দফায় দফায় এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ত্রিমুখী সংঘর্ষের প্রায় ৩ ঘণ্টা পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

আহতরা হলেন- পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম, পুলিশ পরির্দশক রফিকুল ইসলাম, গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী ফাহাদ ইবনে জাহিদ রাহি, রুদ্র, সোহান, ফাহাদসহ নাম না জানা আরও কয়েকজন। গুলিবিদ্ধ আহত শিক্ষার্থীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আটক তিন শিক্ষার্থীর নাম জানা যায়নি।

এর আগে সকাল ১০টার দিকে শহরের কানাইখালী এলাকায় কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা সমাবেশের জন্য জড়ো হন। একই সময় কানাইখালী হকার্স মার্কেটের সামনে শান্তি সমাবেশের প্রস্তুতি নেয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এছাড়াও শহরের মাদ্রাসা মোড় এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেন। এতে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। আতঙ্কে শহরের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল সোয়া ১০টার দিকে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা শহরের মসজিদ মার্কেটের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করতে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। একই সময় কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের সভাস্থলে কে বা কারা ঠিল মারলে পুলিশের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে পুলিশ শিক্ষার্থীদের সড়িয়ে দিতে চাইলে তাদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরাও পুলিশের সঙ্গে এক হয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয়।

দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনাটি শহরের কানাইখালী এলাকা থেকে ছড়িয়ে পড়ে উপরবাজার, নীচাবাজার ও কাপুড়িয়া পট্টি এলাকায়। প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে চলা এই সংঘর্ষের একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা নাটোর-বগুড়া মহাসড়ক অবরোধ করেন। দুপুর ১টার দিকে পুলিশ শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দিতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন শিক্ষার্থীরা। এতে পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম, পুলিশ পরির্দশক রফিকুল ইসলামসহ ৬ পুলিশ সদস্য আহত হন।

পরে পুলিশ ১৫ মিনিট ধরে টিয়ারসেল, রাবার বুলেট ছুড়ে সোয়া ১টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

অন্যদিকে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। সংঘর্ষ চলাকালে মো. ফাহাদ ইবনে জাহিদ রাহি নামে এক শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। এছাড়া শিক্ষার্থীদের ছোঁড়া ইটের আঘাত ও পুলিশের টিআর গ্যাসে ফটো সাংবাদিক গোলাম গাউস, এটিএনবাংলার স্থানীয় ক্যামেরা পার্সন লিমন হোসেন ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের ক্যামেরা পার্সন সোহেল রানাও আহত হন।

এর আগে কানাইখালী এলাকায় সংঘর্ষে এক পুলিশ সদস্য আহত হন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ফাহাদ ইবনে জাহিদ রাহির অবস্থা শঙ্কামুক্ত বলে জানা গেছে। এসব ঘটনায় বর্তমানে শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। মাঠে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা শক্ত অবস্থানে আছে।

নাটোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২৪
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।