ব্রাহ্মণবাড়িয়া: মেয়ে, জামাতা ও দুই নাতনিকে হারিয়ে পাগলপ্রায় বৃদ্ধা মনোয়ারা বেগম। সাজানো সংসার তছনছ হয়ে গেল এক নিমিষেই।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে সোহাগের শাশুড়ি মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘রাতে আমার দুই নাতনির সঙ্গে কথা হয়েছে। ঋণের চাপে আমার জামাই কী করল! আমার দুনিয়াতে কেউ নেই। আমি আর বাঁচতে চাই না। কেউ যদি তাদের মেরে থাকে আমি আল্লাহ্ কাছে বিচার চাই। ’
রোববার (২৮ জুলাই) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার পৌর শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বিজয়পাড়ার এক বাড়িতে নিজ ঘরে মিলে একই পরিবারের চার সদস্যের মরদেহ।
মরদেহগুলো হলো- বিজয় পাড়ার বাসিন্দা সোহাগ (৩৩) ও তার স্ত্রী জান্নাতুল (২২) এবং তাদের সন্তান ফারিয়া (৪) ও ফাহিমার (২)।
জানা যায়, শহরের নিউ মার্কেটে রঙ্গমালা বস্ত্রালয়ের ব্যবসা ছিল সোহাগের। বিজয়পাড়ায় স্ত্রী জান্নাত ও দুই মেয়েকে নিয়ে ছিল তাদের ছোট্ট সাজানো সংসার। পারিবারিক কোনো কলহ না থাকলেও সম্প্রতি ছোট ভাইকে বিদেশ পাঠাতে ও ব্যবসায়িক কারণে সোহাগ ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এ বিষয়ে কখনও খোলামেলা কিছু না বললেও সৎ মায়ের পাওনা এক লাখ টাকা নিয়ে প্রায় সময়ই বিতণ্ডা হতো। এ নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তায় ছিলেন সোহাগ।
শনিবার রাতে অন্যান্য দিনের মতোই স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে নিজ ঘরে শুয়ে পড়েন সোহাগ। সকাল গড়িয়ে গেলেও তারা দরজা না খোলায় বিষয়টি সবার সন্দেহ হয়। এরপর দরজা ভেঙে তাদের চারজনের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে পুলিশ চারজনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
নিহতের পরিবারের লোকজন বলেন, বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে ধারদেনা নিয়ে মানসিক অশান্তিতে ছিলেন সোহাগ। কিন্তু কাউকে কোনোদিন বুঝতে দেননি তিনি।
রহস্যজনক একই পরিবারের চার সদস্যের মৃত্যুর ঘটনার দ্রুত তদন্ত করে বিচারের দাবি জানানা তারা।
নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশ কাজ করছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এলে এর সঠিক কারণ জানা যাবে।
আরও পড়ুন>> ঘরে মিলল স্বামী-স্ত্রী ও দুই মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২৪
এসএএইচ