ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ষড়যন্ত্র-অরাজকতা কঠোর হাতে দমন করব: ড. ইউনূস

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৯, ২০২৪
ষড়যন্ত্র-অরাজকতা কঠোর হাতে দমন করব: ড. ইউনূস ড. মুহাম্মদ ইউনূস (সংগৃহীত ছবি)

ঢাকা: ষড়যন্ত্রকারীরা দেশে অরাজকতা করছে মন্তব্য করে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অরাজকতা ও ভীতির পরিবেশ সৃষ্টিকারী ষড়যন্ত্রকারীদের কঠিন হাতে দমন করব।

বৃহস্পতিবার (৯ আগস্ট) রাতে বঙ্গভবনে শপথ নেওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জনের উৎসবের মুহূর্তে এই স্বাধীনতাকে নস্যাৎ করার জন্য ষড়যন্ত্রকারীরা দেশে একটা অরাজকতা ও ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।

তিনি বলেন, অরাজকতা আমাদের শত্রু। একে দ্রুত পরাজিত করতে হবে। এই মুহূর্তে সরকারের প্রথম কর্তব্য হিসেবে আমরা এই ষড়যন্ত্রকারীদের কঠিন হাতে দমন করব।

ড. ইউনূস বলেন, অরাজকতার বিষ বাষ্প এখন যেই ছড়াবে বিজয়ী ছাত্র জনতাসহ মুক্ত মানুষের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পূর্ণ শক্তি তাকে ব্যর্থ করে দেবে।

সর্বত্র সব অপরাধীর বিচার হবে

স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের ঘৃণ্য চেষ্টায় যারা অপরাধ সংগঠিত করেছেন তাদের শিগগিরই বিচার করা হবে জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, প্রচণ্ড নিষ্ঠুর স্বৈরাচারী সরকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছিল। আমরা তার এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে প্রতিষ্ঠানগুলোর হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনব।

তিনি বলেন, এই ঘৃণ্য চেষ্টায় ব্যবহৃত হয়ে যারা অপরাধ সংগঠিত করেছেন, তাদের আইনি বিচারের মাধ্যমে শিগগিরই উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে। একই কথা দেশের সব মন্ত্রণালয়, সংস্থা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নানা কর্মক্ষেত্রের জন্য প্রযোজ্য। সর্বত্র অপরাধীর বিচার হবে।

অন্তর্বর্তী সরকার আইন বহির্ভূত জবরদস্তিমূলক হুকুম দেবে না জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দ্বিতীয় স্বাধীনতার মিলন মেলা থেকে বাদ যাবে না। যারা আমাদের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো নৌ, সেনা, বিমানবাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), পুলিশ, আনসার, গ্রাম প্রতিরক্ষা, কোস্টগার্ড কেউ বাদ যাবে না। অন্য সবার মতো তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রত্যেক সদস্য আজ আইন বহির্ভূত, জবরদস্তিমূলক হুমুক থেকে মুক্ত। কারও জন্য এটা বিন্দুমাত্র ব্যাহত হলে আমাদের আজকের উৎসব ম্লান হয়ে যাবে।

সবার সহযোগিতা চেয়ে ড. ইউনূস বলেন, নিষ্ঠুর স্বৈরাচারী সরকার দূর হয়ে গেছে। কাল সূর্য উদয়ের সঙ্গে সঙ্গে গণতন্ত্রের, সুবিচারের, মানবাধিকারের নির্ভয়ে মত প্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতার জন্য, সবার স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন ধারনের সুযোগ দেওয়ার সচেষ্ট সরকারের ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্য ও সহমর্মী, দলমত নির্বিশেষে সবাই উপভোগ করবেন। এটাই আমাদের লক্ষ্য। আমাদের এ লক্ষ্য পূরণে সাহায্য করুন।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার মুক্ত বাতাস যেন প্রত্যেকে বুক ভরে নিতে পারেন এই নিশ্চয়তাটাই আমাদের সরকারের প্রথম প্রতিশ্রুতি।

ড. ইউনূস বলেন, প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান ও তার সদস্যরা নিজ নিজ কর্তব্য পালন করার মাধ্যমে দ্বিতীয় স্বাধীনতাকে উপভোগ করবেন। দেশকে গৌরবের শীর্ষে নিয়ে যাবেন। দেশবাসী এবং জগৎবাসীকে উপভোগ করার সুযোগ করে দেবেন।

জাতির পক্ষ থেকে প্রত্যেকে নির্ভয়ে, আনন্দ চিত্তে, নিজ নিজ কর্মস্থলে, নিজ নিজ সামর্থ্য নিয়ে এগিয়ে আসার অনুরোধ করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান।

তিনি বলেন, যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি, ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থাকি, সবার জন্য মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারি, আমাদের বিজয় অবশ্যই হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০০৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০২৪
এমইউএম/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।