ঢাকা, শনিবার, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আমরা এখনো একটি রাষ্ট্র গঠন করতে পারছি না: ফরহাদ মজহার

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪
আমরা এখনো একটি রাষ্ট্র গঠন করতে পারছি না: ফরহাদ মজহার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি): কবি ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফরহাদ মজহার বলেছেন, আমরা এখনো একটি রাষ্ট্র গঠন করতে পারছি না। গঠন করা সম্ভব হলে প্রতিবন্ধী নাগরিকরা এমনিতেই তার মধ্যে চলে আসবেন।

কারও দয়ার প্রয়োজন হবে না।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত এক মুক্ত আলোচনায় প্রতিবন্ধীদের নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। ‘জনপরিসরে অদৃশ্য প্রতিবন্ধী নাগরিক: বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠনে আমাদের প্রত্যাশা’ শিরোনামে আলোচনাটি আয়োজন করে বাংলাদেশ সোসাইটি ফর দ্য এক্সচেঞ্জ অ্যান্ড এডভেক্যাসি নেক্সাস (বি-স্ক্যান)।

ফরহাদ মজহার বলেন, আমরা গ্রামে বড় হয়েছি। গ্রামে প্রতিবন্ধীদের জন্য একটা আলাদা দরদ ছিল। প্রতিবন্ধী ইস্যুটা সামাজিকভাবে গ্রামীণ সমাজে বিরাট কোনো সংকট আকারে হাজির হয়নি। কোনো না কোনোভাবে সমাজ তার (প্রতিবন্ধী) প্রতি রেসপন্স করে। এ বিষয়টা সমাজে ছিল। কিন্তু এ বিষয়টি রাষ্ট্র এবং সমাজে ভেঙে গেছে। পুঁজিবাদের যে ব্যাপার, এটা সবকিছু ভেঙে ফেলে।

তিনি বলেন, আমাদের সমাজের রাষ্ট্রচিন্তা অত্যন্ত দুর্বল। আমরা রাষ্ট্র এবং সরকারের পার্থক্য বুঝি না। আমি বারবার ‘গঠন’ কথাটা বলি। এই গঠন ধারণার মধ্যেই প্রতিবন্ধী কথাটি আছে। কারণ, সে দেশের নাগরিক এবং আপনি যে রাষ্ট্র গঠন করবেন, তার নীতিগত ভিত্তির মধ্যে রাষ্ট্রের ভিন্নভাবে প্রতিভাবান মানুষদের থাকতে হবে।

তিনি আরও বলেন, খাদ্যাভ্যাসের সাথে অনেককিছু জড়িত। আমাদের দেশের অটিস্টিক বাচ্চার সংখ্যা বেড়েছে। সেগুলো সয়াবিন তেল খেয়ে। সয়াবিন যেহেতু জেনেটিক্যালি মডিফাইড; বিদেশে তারা খায় না। তৃতীয় বিশ্বের দেশে খালাস করে। আমাদের যেগুলো ভালো সেগুলো নিয়ে তারা বলে, এটা খাওয়া যাবে না। কেবল বাইরে ব্যবহার করা যাবে।

আলোচনায় বাংলা একাডেমির পরিচালক অধ্যাপক আজম বলেন, যারা মানবসৃষ্টভাবে প্রতিবন্ধী, তাদের দায় রাষ্ট্র কখনো এড়াতে পারে না। এছাড়া যারা প্রাকৃতিকভাবে প্রতিবন্ধী তাদের দিকে তাদের মতো করে নজর দিতে পারাটা সভ্যতা-সংস্কৃতির স্মারক। আমাদের রাষ্ট্রের সক্ষমতা অনেক কমেছে। ফলে আকাঙ্ক্ষা তুঙ্গে নিয়ে অনেককিছু আমরা হয়তো চাইতে পারব না। কিন্তু বিদ্যমান কাঠামোর মধ্যে অনেক চাওয়া পূরণ করা সম্ভব।

আলোচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীনের উপস্থিত থাকার কথা ছিল। কিন্তু অসুস্থতার জন্য তিনি ছিলেন না। এছাড়া নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবির, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তারা উপস্থিত ছিলেন না। সালমা খাতুনের সঞ্চালনায় আলোচনায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বি-স্ক্যানের পরিচালক ইফতেখার মাহমুদ।

ইফতেখার মাহমুদ বলেন, আমাদের জন্য দৃষ্টিভঙ্গি কীভাবে পরিবর্তন হবে! আমাদের দেশে মানুষের বৈচিত্র্য কম। ফলে এখানে বহুত্ববাদী আলোচনা কম হয়। সে কারণে আমরা লেখাপড়া করলেও ভিক্ষুক, হকারি করলেও ভিক্ষুক; এরকম একটা মানসিকতা কাজ করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪
এফএইচ/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।