ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ আশ্বিন ১৪৩১, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সরকারপ্রধানদের মধ্যে যত বৈঠক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৪
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সরকারপ্রধানদের মধ্যে যত বৈঠক

নিউইয়র্কে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ অধিবেশনের ফাঁকে এই দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

গত ২৩ বছরে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সরকারপ্রধানের মধ্যে কোনো দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়নি। সর্বশেষ ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দেখা হয়েছিল।

স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অব দ্য হিস্টোরিয়ান-এর রেকর্ডে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের ছয়জন সরকারপ্রধান আমেরিকায় গিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

মুজিব-ফোর্ড বৈঠক

১৯৭৪ সালের ১ অক্টোবর বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জেরার্ড ফোর্ডের সঙ্গে।

প্রেসিডেন্ট ফোর্ড এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের বৈঠকটি ছিল খুবই সংক্ষিপ্ত। বৈঠকে শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, আমরা দুর্ভিক্ষের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি। শুনেছি যে একটা সাইক্লোন আঘাত হানতে যাচ্ছে। আমরা খুব খারাপ অবস্থার মধ্যে আছি। মানুষজনকে খাওয়ানোর জন্য বিভিন্ন জায়গায় আমি লঙ্গরখানা খুলেছি।  

জবাবে জেরার্ড ফোর্ড ধনী তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর সমন্বয়ে ‘বাংলাদেশ কনসোর্টিয়াম’ করার প্রস্তাব দেন।

জিয়া-কার্টার বৈঠক

১৯৮০ সালে জাতিসংঘ অধিবেশন শেষে বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তৎকালীন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন জিমি কার্টারের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে বৈঠক করেন।  

জিমি কার্টারের সঙ্গে বাংলাদেশে আমেরিকার সাহায্য নিয়ে আলোচনা করেন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। যুক্তরাষ্ট্র এর আগের বছর বাংলাদেশকে ৮৪ মিলিয়ন ডলার সাহায্য দিয়েছিল। যদিও সে বছর বাংলাদেশ ১.৫ বিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি পেয়েছিল।

বৈঠকে আফগানিস্তান এবং কম্বোডিয়া থেকে বিদেশি সৈন্য প্রত্যাহারের ব্যাপারে গুরুত্ব দেন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার ও জিয়াউর রহমান।

সেসময় বাংলাদেশ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে অস্থায়ী সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিল। ওভাল অফিসে বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জিমি কার্টার বলেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ বৈশ্বিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

এরশাদ-বুশ বৈঠক

১৯৯০ সালের অক্টোবর মাসের শুরুতে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জেনারেল এইচ এম এরশাদ বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের (সিনিয়র) সঙ্গে।

নিউইয়র্কের একটি হোটেলে ৪০ মিনিটের সে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। জেনারেল এরশাদের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে ছিলেন তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জাতিসংঘে বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত আতাউল করিম।

প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ-এর সঙ্গে পুরো বৈঠকে ইরাক পরিস্থিতি নিয়ে আলাপ হয়েছে জেনারেল এরশাদের।

খালেদা-বুশ বৈঠক

১৯৯২ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সাক্ষাৎ করেন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের সঙ্গে। হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে প্রায় একঘণ্টা যাবত সে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে খালেদা জিয়া এবং প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ বাংলাদেশের গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক অগ্রগতি, ইরাক যুদ্ধ এবং রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কথা বলেন। সে সময় মিয়ানমার থেকে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছিল।

হাসিনা-ক্লিনটন বৈঠক

২০০০ সালে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের দুইবার বৈঠক হয়েছে। ২০০০ সালের মার্চ মাসে ঢাকা সফরে আসেন বিল ক্লিনটন।

ক্লিনটন ছিলেন একমাত্র মার্কিন প্রেসিডেন্ট যিনি ক্ষমতায় থাকার সময় বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। এর আগে কিংবা পরে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন কোনো প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফর করেননি।

এর সাত মাস পরে শেখ হাসিনা হোয়াইট হাউসে গিয়ে ক্লিনটনের সঙ্গে বৈঠক করেন।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

বাংলাদেশ সময়: ২১১৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৪
এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।