বাগেরহাট: রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে উদ্দেশ্য করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) বলেছেন, সম্মানের সঙ্গে পদত্যাগ করে চলে যান। আর তা না হলে আপনাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে।
রোববার (৩ নভেম্বর) বিকেলে বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বাগেরহাট জেলা শাখার গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, শেখ হাসিনা পালানোর পরে রাষ্ট্রপতি বলেছিলেন পদত্যাগপত্র পেয়েছেন। কিছু দিন পরে তিনি বলেন, পদত্যাগপত্র পাননি। তিনি কচ্ছপের মতো আচরণ করেছেন—বিপদ দেখে মাথা গুটিয়ে নিয়েছেন, বিপদ গেলে আবার মাথা বের করেছেন।
তিনি বলেন, কারও লেজুড় হতে চাই না। বিগত সময়ে যারা ক্ষমতায় গিয়েছেন তারা ইসলামের বারোটা বাজিয়েছেন। ৫ আগস্টের পরে ইসলামী রাষ্ট্রের পর্যায়ে যাওয়ার একটি পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ইসলামী দলগুলো একত্রিত হলে এবং একটি প্ল্যাটফর্ম গঠন করতে পারলে, আশা করা যায় ইসলামী রাষ্ট্র গঠন করা সম্ভব হবে।
ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, গত দেড় দশকের এক স্বৈরশাসকের কবল থেকে আল্লাহ আমাদের রক্ষা করেছেন। ছাত্র-জনতার জীবনের বিনিময়ে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। নতুন বাংলাদেশে আর কেউ স্বৈরশাসক না হতে পারে, এজন্য পিআর সিস্টেম বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন পদ্ধতি প্রবর্তন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচার করতে হবে। আওয়ামী লীগসহ সব দুর্নীতিবাজদের অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে তাদেরকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে।
এছাড়া দুর্নীতিবাজ ও অর্থ পাচারকারীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান ইসলামী আন্দোলন এই শীর্ষ নেতা।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের নায়েবে আমির মাওলানা অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি, আওয়ামী স্বৈরাচার বিদায়ের পর অনেক নব্য স্বৈরাচার চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বে লিপ্ত হয়েছে। তাদেরকে আওয়ামী লীগের পতনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সুস্থ রাজনীতির চর্চার আহ্বান জানাই।
ইসলামী আন্দোলনের বাগেরহাট জেলার সভাপতি হাফেজ মাওলানা মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে গণসমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) মাওলানা শোয়াইব হোসেন, জেলা কমিটির উপদেষ্টা মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক কাসেমী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বাগেরহাট জেলা শাখার সহ-সভাপতি মাস্টার মকবুল হোসেন, এইচ এম সাইফুল ইসলাম, ফকির মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, সেক্রেটারি হাফেজ মাওলানা মোশাররফ হোসাইন, জয়েন্ট সেক্রেটারি মাওলানা ফারুক হোসাইন, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মোহাম্মদ কবির হোসেন বাচ্চু পাইক, শ্রমিক আন্দোলনের জেলা সেক্রেটারি মুফতী নূরুজ্জামান, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সেক্রেটারি মুফতি তরিকুল ইসলাম, যুব নেতা মাওলানা আবু বকর, মাওলানা সালমান আশরাফী, যুব নেতা এইচ এম ইসমাইল হোসেন, হাফেজ মাওলানা মাহবুবুর রহমান, ছাত্র নেতা আব্দুল আজিজ, হোসাইন আহমাদ, মোহাম্মাদুল্লাহ, মাহদী হাসান প্রমুখ।
সমাবেশে বাগেরহাট জেলা ও বিভিন্ন উপজেলা থেকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০২৪
এসএএইচ