ঢাকা, মঙ্গলবার, ২২ পৌষ ১৪৩১, ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ফরিদপুরে সাংবাদিকের মা-বাবাসহ তিনজনকে কুপিয়ে জখম

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০২৫
ফরিদপুরে সাংবাদিকের মা-বাবাসহ তিনজনকে কুপিয়ে জখম সাংবাদিকের আহত মা-বাবা

ফরিদপুর: ফরিদপুরের মধুখালীতে সাংবাদিক সৌগত বসুর বাবা-মাসহ তিনজনকে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা।

শুক্রবার (০৩ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার গ্রামের বাড়ি উপজেলার ডুমাইন গ্রামের পূর্বপাড়া বোস বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

 

পরে প্রতিবেশীরা খবর পেয়ে তাদের উদ্ধার করে ফরিদপুরের একটি হাসপাতালে নিয়ে আসে।

আহতদের মধ্যে রয়েছেন- সাংবাদিক সৌগত বসুর বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্যামলেন্দু বসু (৬৫), মা কাকুলী বসু (৬০) ও প্রতিবেশী কিশোরী প্রীতি মালো (১৫)। তারা ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

সাংবাদিক সৌগত বসু দৈনিক আজকের পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে ঢাকায় কর্মরত বলে জানা গেছে।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক অর্ণব জানান, শ্যামলেন্দু বসুর মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে। তার মাথার হাড় ভেঙে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার জন্য পরিবারকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অন্যদের আঘাত গুরুতর নয়।

আহতদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাতে তারা টিভি দেখছিলেন। এ সময় ঘরের ভেতর একজনকে দেখতে পান। তাকে ধাওয়া দিলে তিনি বাড়ির দোতলায় অবস্থান নেন। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে শ্যামলেন্দু বসুর মাথায় কোপ দেন। পরে অন্যরা এগিয়ে গেলে তাদেরও কুপিয়ে আহত করে পালিয়ে যায় ওই দুর্বৃত্ত।

সৌগতের কাকিমা শুক্লা বসু বলেন, আমরা ফরিদপুর শহরে থাকি। রাত সাড়ে ৮টার দিকে রক্তাক্ত অবস্থায় ওনারা আমাকে ভিডিও কল দিয়ে বাঁচানোর আকুতি জানান। পরে আমি প্রতিবেশীদের জানালে তারা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

সাংবাদিক সৌগত বসু বলেন, বাড়িতে আমার বাবা-মা ছাড়া কেউ থাকে না এবং আমার অসুস্থ মাকে দেখাশুনা করত প্রীতি। তারা এখন গুরুতর অসুস্থ, পুরো ঘটনা এখনও বলা যাচ্ছে না। একজন নাকি একাধিক লোক ছিল তাও বলা যাচ্ছে না। তবে আমাদের সঙ্গে কারো কোনো ঝামেলাও নেই।

তিনি আরও বলেন, এটি চুরির কোনো ঘটনা নয়। আমাদের বাড়িতে অনেক রাত পর্যন্ত টেলিভিশন দেখে। কেউ চুরি করলে তখন আসবে কেন? এছাড়া কোনো মালামালও খোয়া যায়নি। এটা অবশ্যই হামলা বা অন্য কোনো ঘটনা হতে পারে।

ডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার জীবন কুমার মণ্ডল জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে দুর্বৃত্তরা চুরি কিংবা ডাকাতির উদ্দেশ্যে শ্যামলন্দ দাদার বাড়িতে প্রবেশ করে। বাড়িতে শ্যামল দা তার স্ত্রী ও তাদের দেখাশোনার জন্য প্রীতি মালো নামে এক কিশোরী থাকেন। তাছাড়া বাড়িতে কেউ থাকেন না। তার তিন ছেলে বিভিন্ন জেলায় চাকরি করেন।

তিনি বলেন, রাতে হঠাৎ তাদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন শ্যামলন্দ দা ও তার স্ত্রীকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে এবং কাজের মেয়েটিকে স্টিলের লাঠি দিয়ে মাথায় ও শরীরে আঘাত করা হয়েছে। তারা এসময় অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এদের কারো সঙ্গে শত্রুতা নেই। মনে হচ্ছে চুরি করতেই ঢুকেছিল। দেখে ফেলায় হামলা করে।

এদিকে খবর পেয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস্) শৈলেন চাকমা (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) সহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।  

এ সময় শৈলেন চাকমা বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে চুরি করতে এসে ঘটনাটি ঘটেছে। ১৪-১৫ বছরের এক কিশোর ওই বাড়িতে অবস্থান নেয়। বিষয়টি দেখে ফেলায় গৃহকর্তা ধাওয়া দিলে তাকে এবং অন্যদের কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। তবে বিষয়টি আরও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০২৫
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।