সিরাজগঞ্জ: রক্তাক্ত সলঙ্গা বিদ্রোহের ৯৩তম দিবস মঙ্গলবার (২৭ জানুয়ারি)। ১৯২২ সালের এই দিনে তৎকালিন বৃটিশ সরকারের লেলিয়ে দেওয়া পুলিশ বাহিনীর গুলিতে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা হাটে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার নিরস্ত্র বাঙালি শহীদ হন।
যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালন উপলক্ষে মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশ পাঠাগার, নূরুননাহার তর্কবাগীশ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, তর্কবাগীশ মহিলা মাদ্রাসা, তর্কবাগীশ উচ্চ বিদ্যালয় ও সলঙ্গা ফোরাম পৃথক পৃথক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, র্যালি, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ।
তৎকালীন সাম্রাজ্যবাদবিরোধী অসহযোগ আন্দোলন ও খেলাফত আন্দোলনে জনতা উদ্বেলিত হয়ে বিলেতি পণ্য বর্জন করে স্বদেশি পণ্য ব্যবহারের সংগ্রাম শুরু করেছিল। যার ঢেউ লেগেছিল সিরাজগঞ্জ জেলার সলঙ্গায়ও।
১৯২২ সালের ২৭ জানুয়ারি শুক্রবার ছিল বড়হাট বার। মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশের নেতৃত্বে অসহযোগ ও খেলাফত আন্দোলনের কর্মীরা হাটে বিলেতি পণ্য কেনা-বেচা বন্ধ করতে নেমে পরেন। আর এ স্বদেশি আন্দোলনের কর্মীদের রুখতে ছুটে আসে পাবনা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আর.এন.দাস, জেলা পুলিশ সুপার ও সিরাজগঞ্জ মহকুমা প্রশাসক এস.কে সিনহার নেতৃত্বে ৪০ জন সশস্ত্র লাল পাগড়ীওয়ালা পুলিশ।
সলঙ্গার গো হাটায় ছিল বিপ্লবী স্বদেশি কর্মীদের অফিস। পুলিশ কংগ্রেস অফিস ঘেরাও পূর্বক গ্রেফতার করে মাওলানা আব্দুর রশিদকে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে মুক্ত করতে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। বিদ্রোহে ফেটে পরে সলঙ্গার সংগ্রামী জনতা। জনতার ঢল ও আক্রোশ দেখে ম্যাজিস্ট্রেট জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য গুলি চালাতে নির্দেশ দেন। শুরু হয়ে যায় বুলেট বৃষ্টি। ৪০টি রাইফেলের মধ্যে মাত্র ১টি রাইফেল থেকে কোনো গুলি বের হয়নি। এ রাইফেলটি ছিল একজন বাহ্মন পুলিশের। এ সময় বিলেতীপণ্য বর্জন আন্দোলনে সাড়ে ৪হাজার কর্মীসহ সাধারণ মানুষও নিহত হন।
বাংলাদেশ সময়: ০৭১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১৫