ঢাকা, সোমবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ মে ২০২৪, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

২০১৫ সালে জয়পুরহাটে ২০ হত্যা

শাহিদুল ইসলাম সবুজ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৫
২০১৫ সালে জয়পুরহাটে ২০ হত্যা

জয়পুরহাট: ২০১৫ সালে জয়পুরহাটের পাঁচ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ২০টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। হত্যার শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে ৮ নারী, ৩ শিশু, ২ নবজাতক, এক রাজনৈতিক নেতা রয়েছেন।

  
 
বছরের শুরুতে ৮ জানুয়ারি জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার সূর্যবান গ্রামের গৃহবধূ নিলুফার ইয়াছমিন বিউটি (২৩) খুন হন।  
 
৬ ফেব্রুয়ারি জয়পুরহাট সদর উপজেলার দাদরা জন্তি গ্রামের একটি ঝোপ থেকে এক নবজাতকের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
 
১০ ফেব্রুয়ারি দুপুর আড়াইটার দিকে জয়পুরহাট শহরের আরাফাত নগরে শ্বশুর বাড়িতে এসে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ও মাথায় আঘাত করে স্ত্রীকে খুন করে পালিয়ে যান স্বামী লিটন মিয়া। হত্যাকাণ্ডের শিকার গৃহবধু জয়পুরহাট শহরের আরাফাত নগরের রফিকুল ইসলামের মেয়ে সেমি আক্তার (১৮)।
 
৯ মার্চ বিকেলে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মোলামগাড়ী সড়কে শিবির কর্মীদের নিক্ষেপ করা ককটেল আতঙ্কে বাসের ছাদ থেকে পড়ে মারা যান উজ্জল নামে এক ঠোঙ্গা ব্যবসায়ী। উজ্জল নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার বাগধানা গ্রামের রামপদ মণ্ডলের ছেলে। তিনি ১২ বছর ধরে পরিবার নিয়ে জয়পুরহাট শহরের চিত্রা পাড়ায় বসবাস করতেন।
 
১১ মার্চ পাঁচবিবি উপজেলার বাগজানা এলাকার একটি পুকুর থেকে গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় পলাশ (৩৬) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পলাশ হোসেন নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার খাদাইল গ্রামের আবু বকরের ছেলে ও বাগজানা এলাকার একটি চাতালের কেয়ারটেকার ছিলেন।
 
১৪ মার্চ কালাই উপজেলার মাত্রাই গ্রামের তালুকদার পাড়ায় প্রতিপক্ষের হামলায় আলেফা বেগম (৫৮) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত হন আরও এক জন।  
 
১৭ মার্চ আক্কেলপুর উপজেলার গোপীনাথপুরে দোল মেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মরিয়ম (২৫) নামে এক নৃত্য শিল্পীর মৃত্যু হয়। তবে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করে নিহতের পরিবার। নিহত নৃত্য শিল্পী মরিয়ম নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার ছোব গ্রামের সাজ্জাদ হোসেনের স্ত্রী।
 
৩১ মার্চ পাঁচবিবি উপজেলার জামকাশপুর গ্রামে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় মিলি (৮) নামে এক শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মিলি পাঁচবিবি উপজেলার জামকাশপুর গ্রামের প্রবাসী মনিরুজ্জামানের মেয়ে।
 
২২ এপ্রিল পাঁচবিবি উপজেলার বীরনগর গ্রামের তুলসীগঙ্গা নদী থেকে বেলাল হোসেন (৩৫) নামে এক ভ্যানচালকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বেলাল হোসেন পাঁচবিবি উপজেলার বীরনগর গ্রামের ময়েজ উদ্দীনের ছেলে।
 
৩ মে জয়পুরহাট জেলা যুবদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন লরোকে (৪৬) ছুরিকাঘাতে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তিনি জয়পুরহাট পৌর শহরের সবুজ নগর মহল্লার সামছুদ্দিনের ছেলে।
 
২০ জুন পাঁচবিবি উপজেলার ভীমপুর আদীবাসী পল্লীতে একই পরিবারের চার জনকে কুপিয়ে হত্যা করে সুমন হেম্ব্রম (৩৫) নামে এক ঘরজামাই। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তার স্ত্রী সিলভিয়া মারান্ডী (২৭)। নিহতরা হলেন- ঘাতক সুমনের শাশুড়ি সন্ধ্যা রানী হাসদা (৪৫), ছেলে সানী হেম্ব্রম (৬), শালিকা তেরেজা মারান্ডী (২৩) ও ফুফা শ্বশুর মার্কেল মারান্ডী (৫০)।  
 
২৩ জুলাই পাঁচবিবি উপজেলার তুলসীগঙ্গা নদী থেকে অজ্ঞাত পরিচয় (২৫) এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
 
৯ আগস্ট রাতে জয়পুরহাট শহরের জামালগঞ্জ সড়কে পরিচালনাধীন সূর্যের হাসি ক্লিনিকে চিকিৎসকের অবহেলায় এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। ঘটনার পর মৃত নবজাতককে ক্লিনিকে রেখে ক্লিনিকটি বন্ধ করে পালিয়ে যায় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।
 
১৯ সেপ্টেম্বর পৌর শহরের সবুজনগর এলাকার সবুজ নগর-পাচুর চক রাস্তার পাশ থেকে তরিকুল (২৮) নামে এক ফার্মাসিস্টদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তরিকুল জয়পুরহাট শহরের খঞ্জনপুর এলাকার আব্দুল কুদ্দুস আলী মণ্ডলের ছেলে।
 
৩ অক্টোবর রাত পৌনে ১২টার দিকে জয়পুরহাট পৌর শহরের তেঘর-দেবীপুর রেলগেট এলাকার একটি পরিত্যাক্ত বাড়িতে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী কামালকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষরা। কামাল দেবীপুর গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে।  
 
৭ নভেম্বর ক্ষেতলাল উপজেলায় আব্দুল হাকিম (৫০) নামে এক ব্যক্তিকে হত্যা করে একটি তার ব্যাটারি চালিত অটোভ্যান ছিনতাই করে দুর্বৃত্তরা। নিহত ভ্যানচালক উপজেলার তালশন গ্রামের বাসিন্দা।
 
১০ নভেম্বর ভোরে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মহব্বতপুর দুর্গাপুর গ্রামে স্ত্রীর পরকীয়ার জের ধরে জামিল উদ্দিন (৩০) নামে এক যুবক খুন হন। এ ঘটনায় তার স্ত্রী জোসনা বেগম ওরফে ফুরকানকে আটক করে পুলিশ।
 
সর্বশেষ ২৫ ডিসেম্বর পাঁচবিবি উপজেলায় রাধা রানী নামে আড়াই বছর বয়সী এক শিশুকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। রাধা রাণী পাঁচবিবি উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের রশিদপুর গ্রামের ব্যবসায়ী পরেশ চন্দ্র মণ্ডলের মেয়ে।  
 
জয়পুরহাট জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (হেড কোয়ার্টার) রুহুল আমীন বাংলানিউজকে বলেন, বিচ্ছিন্ন এসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় অধিকাংশ আসামিদের ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত বাকিদের গ্রেফতারের প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে।
 
তবে, বিগত বছরের তুলনায় এ বছর জয়পুরহাটে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা কম ঘটেছে বলে দাবি করেন সহকারী পুলিশ সুপার।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৫        
এমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।