ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় রোগীর সফল অস্ত্রোপচার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৯
ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় রোগীর সফল অস্ত্রোপচার

বরিশাল: অসাধ্যকে সাধন করে প্রশংসিত হওয়াই যেন বরিশাল ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কাজ। সর্বশেষ হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে রোগীর জীবন বাঁচাতে অন্যরকম অস্ত্রোপচার ভূমিকা রেখে ফের আলোচনায় এসেছেন তারা।

১৫ বছর বয়সী এক কিশোরের চোয়াল হয়ে গলা ভেদ করে অপর পাশ দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া একটি মোটা রড কেটে অপসারণ করেছেন তারা। তাদের এ সহযোগিতার কারণে চিকিৎসকদের সফল অস্ত্রোপচারে প্রাণে বেঁচে গেছে মো. সিয়াম নামের কিশোরটি।

জানা গেছে, কিশোর সিয়াম ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার জয়া গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স বরিশাল সদর কার্যালয়ের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর দেবাশীষ বিশ্বাস জানান, সিয়াম নামের কিশোর নিজ গ্রামে বাইসাইকেল চালাচ্ছিল। এসময় সেখানকার নির্মাণাধীন একটি ব্রিজে দুর্ঘটনা ঘটে সে পড়ে যায়। তখন নির্মাণাধীন ব্রিজে পাঁচ সুতার মোট একটি রড তার মুখমণ্ডলের নিচের অংশে চোয়াল হয়ে গলা ভেদ করে ভেতরে ঢুকে যায়।

ওই অবস্থায় তাকে প্রথমে বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে উন্নত চিকিৎসার বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের সার্জনারি বিভাগে ভর্তি করা হয়।

এদিকে, ঘটনার দিন অর্থাৎ ২৮ ডিসেম্বর রাতেই সিয়ামের গলার মধ্যে গেঁথে যাওয়া রড অপসারণে পঞ্চম তলায় অপারেশন থিয়েটারে অস্ত্রোপচার শুরু করেন চিকিৎসকরা। কিন্তু রডটি যেভাবে গলার মধ্যে গেঁথে ছিল তাতে স্বাভাবিকভাবে তা অপসারণ করা চিকিৎসকদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছিল না।

পরে হাসপাতালের চিকিৎসকরা বরিশাল সদর ফায়ার সার্ভিসকে বিষয়টি অবহিত করেন। এরপর বরিশাল ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর দেবাশীষ বিশ্বাসের নেতৃত্বে একটি রেসকিউ টিম হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে ছুটে যান।

দেবাশীষ বিশ্বাস বলেন, আনুমানিক পাঁচ সুতার মোটা ওই রডটি গলার ডানপাশে ওপরের অংশ থেকে বের হয়ে আটকে ছিল। তখন হাসপাতালের নাক-কান ও গলা বিভাগের ডা. মো. মইনুজ্জামান ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে হাইড্রোলিক কাটার, লক কাটারসহ অন্য যন্ত্রের সাহায্যে গলার মধ্যে গেঁথে থাকা রডটির অতিরিক্ত অংশ চোয়ালের নিচ থেকে কেটে ফেলেন ফায়ার সার্ভিসের টিম।

এর পর পরই হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে অস্ত্রপচার শুরু করেন চিকিৎসকরা। ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর দেবাশীষ বিশ্বাসের নেতৃত্বে কিশোরের গলার রড অপসারণ অপারেশনে ফায়ার সার্ভিসের লিডার মো. সানাউল সরদার, চালক মো. এরশাদ মোল্লা, ফায়ার ফাইটার মো. ফজলুর রহমান, মো. জুয়েল খান, মো. রিয়াদ খান ও বরুন সরকার অংশ নেন।

অপরদিকে নাক-কান ও গলা বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আমিনুল ইসলাম, সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মো. মুহিনুজ্জামান, ডা. সাইফুল ইসলাম শাকিলসহ চিকিৎসকদের একটি টিম এ অপারেশনে অংশ নেয়।

এদিকে, সফল অস্ত্রোপচার শেষে কিশোরকে নিবিড় পর্যবেক্ষণের জন্য হাসপাতালের পোস্ট অপারেটিভে পাঠানো হয়। বর্তমানে কিশোরের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন শেবাচিম হাসপাতালের নাক-কান ও গলা বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার মো. মুহিনুজ্জামান।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৯
এমএস/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।