এ অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের স্থানটি তিন উপজেলার অন্তর্ভুক্ত। এ উপজেলাগুলো-সিলেটের ওসমানীনগর, সিলেটের বালাগঞ্জ এবং মৌলভীবাজারের সদর।
এ ঘাটের বাস্তবচিত্র সম্পর্কে তারা বলেন, প্রতিদিন ২০/২৫টি নৌকা এসে ৪টি ড্রেজার মেশিনের উত্তোলন করা বালু বোঝাই করে নিয়ে যায়। প্রতি ঘনফুট সরকারি বালুর মূল্য ১.২৫ পয়সা। সে হিসেবে গড়ে দৈনিক ৪ লাখ ঘনফুট বালু অর্থাৎ দৈনিক দাম পাঁচ লাখ টাকার বালু উত্তোলন করা হয়। কেউ কিছু বলে না।
এই দুই এলাকাবাসী আরও জানান, একদিকে নদী খনন মেশিন, অপরদিকে অবৈধ বালু উত্তোলন মেশিন। এটা কি কখনো কাম্য হতে পারে? শুধু একটি ড্রেজার মেশিন নয়; চারটি ড্রেজার মেশিন লাগানো এখানে। এগুলো এতো ভয়ংকর যে নদীর নিচে ৮০/৯০ ফুট পর্যন্ত গর্ত হয়ে যায়। কারণ এগুলো তো পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাইডোগ্রাফিক চার্ট মোতাবেক কাটা হয় না। স্বেচ্ছাচারীভাবে কাটা হয়ে থাকে। বাংলানিউজের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে কুশিয়ারা এই ঘাটে অবৈধ বালু তোলা হচ্ছে। এই বালু সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িতরা এলাকায় প্রভাবশালী।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, কুশিয়ারা নদীর এই অবৈধ বালু উত্তোলনের মোহনাটি তিন উপজেলায় সীমানায় হওয়ায় একেক উপজেলা প্রশাসন অপর উপজেলা প্রশাসনের দায়-দায়িত্ব এর দোহাই দিয়ে বিষয়টির প্রতি পাশ কাটিয়ে থাকে।
যোগাযোগ করা হলে ওসমানীরগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কবির উদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিপক্ষ লোকজন আমাদের নামে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমাদের কাছে বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। তাছাড়া বালু উত্তোলন করে শেরপুরের ইকোনমি জোনে মাটি ভরাটের জন্য দেওয়া হচ্ছে।
সিলেট ওসমানীনগর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদ মোবারক বাংলানিউজকে বলেন, এখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স্যারের সঙ্গে একদিন আমি অভিযানে গিয়েছিলাম। আমরা গিয়ে পৌঁছতে পৌঁছতে ওরা চলে যায়। এই কুশিয়ারার বালু উত্তোলনের মোহনাটা হচ্ছে তিন উপজেলা অর্থাৎ ওসমানীনগরের কিছু, বালাগঞ্জের কিছু আর মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কিছু সীমানা। সময়ে অভাবে এখন তিন উপজেলার ইউএনও একত্র না হতে পারার কারণে ওই এলাকায় অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে জোরালো অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। এখানের কোনো ডাক (ইজারা) নেই।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সিলেট বিভাগীয় কমিশনার মো. মশিউর রহমান এনডিসি বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলো না; এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২০
বিবিবি/এএটি