বিআরটিএ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাটে বিআরটিএর কোনো কার্যালয় ছিল না। বাগেরহাটবাসীকে সেবা নিতে বিআরটিএ খুলনা সার্কেল অফিসে যেতে হত।
প্রতিদিন শতাধিক লোক বিভিন্ন সেবা নিতে আসতে শুরু করেছেন এখানে। গাড়ির নিবন্ধন, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ট্রাক্স টোকেন, ফিটনেস, রুট পারমিটসহ বিভিন্ন সেবা নিতে বিআরটিএতে আসেন বাগেরহাটের মানুষ।
বিআরটিএ কার্যালয় চালুর পর থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন সেবার জন্য তিন হাজারের বেশি আবেদন পড়েছে। একজন সহকারী পরিচালক, একজন পরিদর্শক, একজন উচ্চমান সহকারী, একজন অফিস সহায়ক এবং একজন সিল মেকানিকের পদ রয়েছে এই সার্কেলে। জেলার বিপুল পরিমাণ এ জনগোষ্ঠীর সেবা দেওয়ার জন্য এ জনবল যথেষ্ট নয়। এর মধ্যে জানুয়ারি মাস থেকে সহকারী পরিচালক অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন পিরোজপুর ও ঝালকাঠিতে। ফলে বাগেরহাট সার্কেলে সেবা প্রদানে ধীরগতি সৃষ্টি হয়েছে। বিড়ম্বনায় পড়ছেন যানবাহন মালিক ও চালকরা।
বাগেরহাট শহরের পুরাতন কোট চত্বর এলাকায় বিআরটিএর অফিসে সেবা নিতে আসা কয়েকজন বলেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইনকে স্বাগত জানিয়ে এবং দায়িত্ববোধ থেকে তারা গাড়ির কাগজপত্র নবায়ন ও ড্রাইভিং লাইসেন্স করছেন। তবে সময় মতো সেবা না পেয়ে অনেকে হতাশ হয়েছি আমরা।
মোটরসাইকেলের মালিকানা পরিবর্তন করতে আসা শেখ সোহেল হোসেন বলেন, গেল বছর ১৪ নভেম্বর মোটরসাইকেলের মালিকানা পরিবর্তন করতে টাকা জমা দিয়েছি। এখনও আমার কাজ হয়নি। অনেকবার এসেছি অফিসে। কিন্তু মালিকানা পরিবর্তন না হওয়ায় সড়কে সার্জেন্টরা ঝামেলা করেন।
রফিকুল ইসলাম বলেন, মোটরসাইকেলের ডিজিটাল প্লেটের জন্য অনেক আগে টাকা জমা দিয়েছি। কিন্তু এখনও পাইনি।
আল আমিন বলেন, নতুন গাড়ি কিনেছি। গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের জন্য কত টাকা জমা দেব কোন ব্যাংকে দিব তা জানতে অফিসে এসেছি। কিন্তু এ টেবিল থেকে ও টেবিলে যেতে বলছে। কেউ বুঝিয়ে বলছে না কি করতে হবে।
সময় মত সেবা না পেয়ে বার বার অফিসে ঘুরতে হচ্ছে এমন অভিযোগ করেছেন অনেক সেবাগ্রহীতা।
উচ্চমান সহকারী নজরুল ইসলাম বলেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ কার্যকর হওয়ার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। অনেকেই ১০-২০ বছরের পুরোনো গাড়ির কাগজপত্র ঠিক করতে আসছেন। কিন্তু আমরা লোক কম থাকায় সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। তারপরও চেষ্টা করছি সেবা গ্রহীতাদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে।
বাগেরহাট বিআরটিএর সহকারী পরিচালক প্রকৌশলী তানভীর আহম্মেদ বলেন, যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ট্যাক্স টোকেন, ফিটনেস, রুট পারমিট, দুর্ঘটনা রিপোর্টসহ বিভিন্ন কাজ করতে হয় আমাদের এখানে।
জানুয়ারি মাস থেকে আমি পিরোজপুর ও ঝালকাঠি জেলায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি। সপ্তাহে দুই-তিন দিনের বেশি বাগেরহাটে কাজ করতে পারিনা। ফলে সেবা দিতে কিছু সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। সেবাগ্রহীতাদের ভোগান্তি কমাতে সপ্তাহের ছুটির দিন শুক্র ও শনিবারও কাজ করতে হয় আমাকে।
তিনি আরও বলেন, বাগেরহাট সার্কেলে স্থায়ী জনবল মাত্র চারজন। এর বাইরে একজন সিল ম্যাকানিক রয়েছে। এত স্বল্প জনবলে আমাদের পক্ষে সেবা দিতে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। বাগেরহাট সার্কেলের অর্গানোগ্রাম সংশোধনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। জনবল বৃদ্ধি ও অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন বন্ধ হলে বাগেরহাট সার্কেলে সেবা দেওয়া আরও গতিশীল হবে বলে আশা প্রকাশ করেন এই কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২০
আরএ