শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
মোমিন মিয়া পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের উফারমারা নাটারবাড়ি গ্রামের সহিদার রহমানের ছেলে।
মৃত শ্রমিক নেতা মোমিন মিয়ার ভাই আসাদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, দীর্ঘদিন পাথর শ্রমিকের কাজ করতেন মোমিন। যখন তিনি জানতে পারেন পাথর শ্রমিকদের সিলোকোসিস রোগ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তখন মোমিন মিয়া শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসা খরচসহ বিভিন্ন দাবিতে পাথর শ্রমিকদের নিয়ে সংগঠন গড়ে তোলেন। এ কারণেই দীর্ঘদিন পাথর শ্রমিক সমিতির সভাপতি ছিলেন মোমিন মিয়া। তার নেতৃত্বে বুড়িমারীর পাথর শ্রমিকরা বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) মাধ্যমে ঢাকা বক্ষব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। তবে এ রোগে আক্রান্ত কোনো রোগীই সুস্থ জীবন ফিরে পাননি। পেটের দায়ে পাথর ভাঙার কাজ করা মোমিন উদ্দিনও আক্রান্ত হন মরণব্যাধি সিলোকোসিসে। ২০১২ সালে এ রোগ ধরা পড়লে বিয়ে করেননি মোমিন। এরপর প্রায় সময় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি সিলোকোসিসে অসুস্থতা বাড়লে ১৫ দিন রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেন মোমিন উদ্দিন। গত বৃহস্পতিবার অসুস্থতা বোধ করলে তাকে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তিনি মারা যান।
উল্লেখ্য, ২০০০ সালে ভিক্টরি মোজাইক কোম্পানি নামে ক্র্যাশার মেশিন সর্বপ্রথম বুড়িমারী স্থলবন্দরে স্থাপন করেন। এরপর থেকে বাড়তে থাকে পাথর ক্র্যাশার মেশিনের সংখ্যা। একই সঙ্গে বাড়তে থাকে সিলোকোসিসে শ্রমিক মৃত্যুর সংখ্যাও। বেসরকারি একটি সূত্রমতে এ পর্যন্ত ৭২ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে মরণঘাতি সিলোকোসিসে। সর্বশেষ মৃত্যুর মিছিলে যুক্ত হলেন পাথর শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের নেতা মোমিন উদ্দিনও।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২০
এনটি