ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সুন্দরবন মার্কেটে উচ্ছেদ

পুনর্বাসন চান ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২০
পুনর্বাসন চান ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা

ঢাকা: রাজধানীর গুলিস্তানের সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। পাঁচতলা এ ভবনে নকশাবহির্ভূত বেশ কিছু স্থাপনা করা হয়েছিল, যা ভাঙার কাজ করছে সংস্থাটি।

আগামী সপ্তাহে মার্কেটের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে পুনঃস্থাপনের পর দোকানিদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে ডিএসসিসি।

ডিএসসিসি বলছে, মার্কেটে নকশাবর্হিভুত ৭৮৫টি অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। এরই মধ্যে প্রায় ৪ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএসসিসির কর্মকর্তারা।

তবে মার্কেটের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও দোকানিরা বলছে, পুরো মার্কেটে ৭৮৫টি দোকান রয়েছে। সিটি করপোরেশনের এ উচ্ছেদ অভিযানের কারণে আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত। আগামীতে আমরা আমাদের দোকান ঠিকমত ফিরে পাবো কি সে বিষয়টি নিয়ে আশঙ্কায় আছি। কারণ আমাদের ৭৮৫টি দোকানের খাজনা ও ট্যাক্স সম্পূর্ণ নিয়ম অনুযায়ী দেওয়া আছে। মার্কেট ভাঙার কারণে অনেক ব্যবসায়ী এখন পথে বসে গেছে। যদি তাদের পুনর্বাসন না করা হয় তবে এ মার্কেটের সঙ্গে জড়িত অনেক পরিবার পথে বসে যাবে।

তারা আরও বলেন, ডিএসসিসির আগের মেয়র এসে এ মার্কেটের সব দোকান দিয়েছিলো। কিন্তু বর্তমান মেয়র এসে তা আবার ভাঙছে। এখানে ডিএসসিসির একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের পেছনে কাজ করছে বলেও জানান ব্যবসায়ীরা।

রোববার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে গুলিস্তানের সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটের সামনে উচ্ছেদ অভিযানে উপস্থিত থাকা ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. রাসেল সাবরিন বাংলানিউজকে বলেন, এ ধরনের নকশার বাইরে যে অবৈধ স্থাপনা রয়েছে সেগুলো আমরা ভাঙার কাজ করছি। এখন পর্যন্ত ৪ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা ভাঙা সম্পন্ন হয়েছে। উচ্ছেদ অভিযান আজ বিকেল পর্যন্ত চলবে। এখানে কোনো ভেহিকল দিয়ে ভাঙার কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই মেনুয়াল পদ্ধতিতে আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে মার্কেটটি দোকান মালিকদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন মার্কেট উচ্ছেদের বিরুদ্ধে বিষয়ে আদালতে রিট করা হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আদালত আমাদের যেভাবে বলেছে, সেই অনুযায়ী আমরা উচ্ছেদ কার্যক্রম চালাচ্ছি। এর বাইরে আমাদের কোনো কার্যক্রম নেই।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের বিষয়ে এরই মধ্যে ডিএসসিসির মেয়রের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। স্যার (মেয়র) বিভিন্ন সময় মিডিয়াতে বলেছেন, প্রকৃতপক্ষে ক্ষতিগ্রস্তদের বিষয়ে বিবেচনা করবেন।

এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা বলছে, আমরা পূনর্বাসন চাই। বর্তমান মেয়র যাতে সঠিক বিবেচনায় আমাদের পুনর্বাসন করেন সেটি আমাদের প্রত্যাশা।

সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটের পঞ্চমতলায় দু’টি দোকানের মালিক মো. মোসারফ হোসেন সরকার। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, মার্কেটের বেজমেন্টের বিষয়ে আদালতে একটা রিট ছিলো। কিন্তু সিটি করপোরেশন এখন বলছে এটা আইন বর্হিভুত। এরপর ভবনের ৫ম তলার বিষয়ে আরও একটি রিট করা হয়েছিলো। তবে সেটি আদালত খারিজ করে দিয়েছেন। এ মার্কেটের ৭৮৫টি দোকানের মধ্যো ৭০০ ওপরে দোকানের খাজনা ও ট্যাক্স পরিশোধ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আগের মেয়র দিয়েছিলেন, কিন্তু বর্তমান মেয়র মার্কেট ভেঙে দিচ্ছেন। এ হিসাবটা আমরা মিলাতে পারছি না। এখন আমরা কোথায় যাবো?

এখন মার্কেটের দোকানিদের মধ্যে যাদের বৈধ কাগজপত্র রয়েছে আমরা চাই তাদের সবার পুনর্বাসন করা হোক।

মার্কেটের আন্ডারগ্রাউন্ডের দোকানি দেলোয়ার হোসেন বলেন, শুধু আন্ডারগ্রাউন্ডে ৩০০ দোকান রয়েছে। এগুলো সব করপোরেশন থেকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন বলছে এখানে কোনো দোকান দেওয়া হবে না। তবে এ ৩০০ দোকানের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী পরিবারগুলো কোথায় যাবে। আমরা চাই পুনর্বাসন করে আমাদের জীবিকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক।

** গুলিস্তানে সুন্দরবন মার্কেটে উচ্ছেদ অভিযান

বাংলাদেশ সময়:১৭৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২০
এসজেএ/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।