ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রাঙামাটিতে শিক্ষাবিপ্লব

মঈন উদ্দীন বাপ্পী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২০
রাঙামাটিতে শিক্ষাবিপ্লব

রাঙামাটি: পাহাড়ি জেলা রাঙামাটি। সারাদেশের তুলনায় এ জেলা শিক্ষাক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে ছিলো।

এখানে উচ্চ শিক্ষার কোনো প্রতিষ্ঠান ছিলো না। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সন্তানদের জেলার বাইরে গিয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করা অনেক কষ্টসাধ্য ছিলো।

বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই পিছিয়ে পড়া পাহাড়ের জনগোষ্ঠীর সন্তানদের কথা ভেবে দুর্গম পাহাড়ের প্রতিটি আনাচে-কানাচে স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠা করে। প্রতিষ্ঠা করা হয় সবচেয়ে দেশের গুরুত্বপূর্ণ উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাঙামাটি মেডিক্যাল কলেজ’।

রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়:
রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রাবিপ্রবি) পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। আওয়ামী লীগ সরকার তৎকালীন সময়ে রাঙামাটিতে দেশের এ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করলেও পরবর্তী সরকার এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগ সরকার আবারো ক্ষমতায় এসে পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করে।

ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ), বায়োলজিক্যাল সায়েন্স (ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট সায়েন্স) এবং বিজনেজ স্টাডিস (ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ) তিনটি অনুষদের মাধ্যমে ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির কার্যক্রম শুরু করে। সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পসের জন্য জেলা সদরের ঝগড়াবিল মৌজায় ৬৪ একর জায়গা অধিগ্রহণ করে ২২৭ কোটি ব্যয়ে একটি মাস্টার প্লান তৈরি করে।

রাঙামাটি মেডিক্যাল কলেজ:
বর্তমান সরকার আরেকটি চমক দেখিয়েছে রাঙামাটিতে মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন করে। ২০১৪ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে রাঙামাটি সদর হাসপাতালে কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটে চারটি ব্যাচের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। এখানে এক বছর মেয়াদী হাতে-কলমে শিখনসহ স্নাতক পর্যায়ে পাঁচ বছর মেয়াদী এম.বি.বিএস শিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে। প্রতি বছর ৫১ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয় এখানে।

মেডিক্যাল কলেজটির জন্য সরকার জেলা শহরের ‘সুখী নীলগঞ্জ’ (রাঙাপানি) এলাকায় প্রস্তাবিত নিজস্ব জমি অধিগ্রহণ করে। শিক্ষার্থীদের জন্য দু’টি ছাত্রাবাস এবং তিনটি ছাত্রীবাস রয়েছে। অধ্যক্ষ এবং কলেজের অন্য স্টাফদের জন্য বাংলো রয়েছে। কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য মাইক্রোবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

রাঙামাটি সরকারি কলেজ:

১৯৬৫ সালের পহেলা জুলাই রাঙামাটি সরকারি কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। কলেজটি বাংলাদেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ। কলেজটিতে স্বাধীনতার পর থেকে শিক্ষার ক্ষেত্রে তেমন কোনো উন্নতি না ঘটলেও বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে দেশের এ প্রাচীন কলেজটির দিকে সুনজর দেয়। এ সরকারের আমলে বর্তমানে কলেজে ১৭টি বিষয়ে অনার্স, মাস্টার্স চালু করা হয়েছে। কলেজে ১৩২ শয্যার ছাত্রীবাস, পঞ্চম তলা বিশিষ্ট পরীক্ষা হল ভবন নির্মাণ করা হয়।

এছাড়াও রাজস্থলী উপজেলা কলেজ সরকারিকরণ, বাঙ্গালহালিয়া কলেজ সরকারিকরণ এবং নানিয়ারচর কলেজ স্থাপন করা হয়। নির্মাণ করা হয় অসংখ্য মাধ্যমিক, প্রাথমিক স্কুল।

রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাঙামাটি মেডিক্যাল কলেজ বাস্তবায়ন কমিটির অন্যতম নেতা জাহাঙ্গীর আলম মুন্না বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের জন্য বড় সারপ্রাইজ হলো- বর্তমান সরকার আমাদের এলাকায় দু’টি বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙামাটি মেডিক্যাল কলেজ) প্রতিষ্ঠা করেছে। দুর্গম এলাকায় আজ শিক্ষার আলো পৌঁছে গেছে। এটাই সরকারের বড় সাফল্য।

মহিলা সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও রাঙামাটি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ফিরোজা বেগম চিনু বাংলানিউজকে বলেন, আমি এমপি থাকা অবস্থায় রাঙামাটির শিক্ষার উন্নয়নে জননেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যতোবার অনুরোধ করেছি ততবার তিনি আমার কথা রেখেছেন। রাঙামাটিতে শিক্ষা ক্ষেত্রে নিরব বিপ্লব চলছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি বাংলানিউজকে বলেন, রাঙামাটি শিক্ষা ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে ছিলো। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে রাঙামাটিতে শিক্ষার বিপ্লব ঘটিয়েছে। অতীতে কোনো সরকারের পক্ষে তা করা হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।