ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

পাবনায় নারী উদ্যোক্তাদের খাদ্য প্রর্দশনী ও বিক্রয়মেলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২১
পাবনায় নারী উদ্যোক্তাদের খাদ্য প্রর্দশনী ও বিক্রয়মেলা

পাবনা: পাবনায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে স্থানীয় নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে খাদ্য প্রর্দশনী ও বিক্রয়মেলা। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এ মেলাতে ভোজনপ্রেমী দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।

 

মেলাতে প্রতিটি স্টলে নিজেদের তৈরি বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন নারী উদ্যোক্তারা। ক্রেতাদের পছন্দসই খাবার মেলা প্রাঙ্গণেই প্রস্তুত করে পরিবেশ করা হচ্ছে। একই সময় ক্রেতাদের সঙ্গে পরিচয়ের মাধ্যমে নিজেদের ব্যবসার প্রসার ঘটছে বলেও মনে করছেন তারা।

শহরের রাধানগর মজুমদার একাডেমী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে স্থানীয় নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে পাঁচ দিনব্যাপী খাদ্য প্রর্দশনী ও বিক্রয়মেলা চলছে। হাংরি পাবনার আয়োজনে দ্বিতীয় বারেরমত এ আয়োজনে ব্যাপক দর্শনার্থী ও ক্রেতা সমাগম ঘটেছে মেলা প্রাঙ্গণে। চলতি মাসের ২৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই মেলা শেষ হবে ৩১ ডিসেম্বর শুক্রবার।

জেলার ৫০ জন নারী উদ্যোক্তাদের সমন্বয়ে ৩২টি স্টলের মাধ্যমে এই খাদ্য প্রর্দশনীর আয়োজন করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রকারের দেশি পিঠা, কেক, ফুচকা, মাংসের তৈরি বিভিন্ন ধরনের খাবারসহ সামদ্রিক মাছ বিক্রি হচ্ছে মেলাতে। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংগ্রহকৃত আর নিজেদের তৈরিকৃত খাদ্য নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন তারা। বিশেষ করে হাতে তৈরি ঘি, মিষ্টিসহ দুধের নানা খাদ্যসামগ্রী বিক্রি হচ্ছে এবারের খাদ্য মেলায়। করোনাকালীন ঘরবন্দী নারীদের কর্মমুখী ও বাড়তি উপার্জনের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে হাংরি পাবনা এ মেলার আয়োজন করেছে। মেলাতে প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকার খাদ্যসামগ্রী বিক্রি হচ্ছে।

মেলার আহ্বায়ক দেয়ান মাহাবুব বলেন, সমাজের জন্য মানুষের জন্য সেবামূল যে কাজগুলো রয়েছে সেটি করে যাওয়ার চেষ্ট করছি। করোনাকালীন দেশের অনেক নারী পুরুষ বেকার হয়ে পড়েছেন। কর্মহীন এই নারীদের জন্য কিছু করার প্রয়াশ থেকে তাদের সঙ্গে নিয়ে তিন বছর আগে হাংরি পাবনা নামে একটি ফেসবুক পেজ খুলি। সেখানে হোমমেড খাবার গ্রাহকের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেওয়ার প্রত্যয় নিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু। এখন আমাদের অনেক নারী উদ্যোক্তা স্বাবলম্বী। অন্য পেশার পাশাপাশি নিজেরা ঘরে বসে খাদ্য তৈরি করে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করে বেশ ভালো উপার্জন করছেন। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই সব নারীরা নিজের ভাগ্যের পরিবর্তন নিজেরাই করতে পারবেন বলে আমি মনে করি। এই মেলার মাধ্যমে সব শ্রেণীপেশার মানুষের সঙ্গে তাদের পরিচয় ঘটছে। সবাই দেখে বুঝে ভালো মন্দ বিচার করে তাদের পছন্দের খাদ্য পণ্য কিনছেন। আবার পরবর্তীতে নেওয়ার জন্য অর্ডার করছেন। এর মাধ্যমে তাদের একটি ব্যবসায়িক বন্ধন তৈরি হচ্ছে।

হাংরি পাবনা নামে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে ২০১৯ সালে এই নারী উদ্যোক্তাদের যাত্রা শুরু হয়। করোনাকালীন জেলার শিক্ষিত কর্মহীন নারী-পুরুষদের ঘরে বসে উপার্যজনের একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ শুরু করেন তারা। গত বছর ছোট পরিসরে মেলার মাধ্যমে নিজেদের আত্ম প্রকাশ ঘটান এই নারী উদ্যোক্তারা। চাকরির পিছে না ছুটে ঘরে বসে স্বল্প পূঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন তারা। ক্রেতাদের পছন্দের খাদ্যের অর্ডার নিয়ে সেটি ক্রেতার বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে স্বল্প সময়ের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে হাংরি পাবনা। এখন এই গ্রুপের সদস্য সংখ্যা পাঁচ শতাধিক। এবারের মেলাতে অংশগ্রহণকারী প্রায় প্রতিটি উদ্যোক্তাই বেশ ভালো সারা পেয়েছেন বলে জানান তারা।  

মেলাতে বিশেষ ছাড়ে নিত্য প্রয়োজনী ব্যবহার সামগ্রী তেল, গুড়া সাবান, দুধ, সরিসার তৈল, ঘি, কুমড়া বড়ি, পায়েস, নারীকেলের তৈরি খাদ্যসামগ্রী সুলভ মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলার গেট খোলা থাকছে। ৩১ ডিসেম্বর মেলার সমাপ্ত হবে। প্রতিদিন মেলাতে বিভিন্ন খাদ্য দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।  

২৭ ডিসেম্বর মেলা উদ্বোধন করেন পাবনা সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স ও পাবনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল রহিম লালসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।