ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ০২ জুলাই ২০২৪, ২৪ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

একুশের কম বয়সীদের জন্য নিষিদ্ধ হলো মদ

শাহেদ ইরশাদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২২
একুশের কম বয়সীদের জন্য নিষিদ্ধ হলো মদ

ঢাকা: ২১ বছরের কম বয়সীদের জন্য মদ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। একই সঙ্গে অ্যালকোহল সেবন এবং ব্যবহারের জন্য সরকারের অনুমতি নিতে হবে।

এছাড়াও সব ধরনের অ্যালকোহল সম্পর্কিত অনুমতির জন্য লাইসেন্স, অনুমোদন এবং নবায়ন ফি বাড়ানো  হয়েছে।

নতুন অ্যালকোহল ক্রয়-বিক্রয় বিধিতে বলা হয়েছে, বিশেষ কোনো কারণ  ছাড়া অনুমোদিত ব্যক্তির কাছে একবারে সর্বোচ্চ তিন বোতল এবং এক মাসে ৭ বোতল অ্যালকোহল বিক্রি করা যেতে পারে।

তবে কোনো এলাকায় কমপক্ষে ১০০ জন স্থানীয় মদের লাইসেন্সধারী বা বিদেশি থাকলে সে এলাকায় সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অ্যালকোহল বিক্রির লাইসেন্স দিতে পারবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নতুন জারি করা অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা-২০২২ এ অ্যালকোহলের বিক্রয়, বিপণন, আমদানি-রপ্তানি, সংরক্ষণ, উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ এবং সেবনে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার জন্য এই বিধানগুলো যুক্ত করা হয়েছে।

অ্যালকোহল বহন এবং পরিবহনের জন্যও পাসের প্রয়োজন হবে, আমদানি-রপ্তানি, উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, সরবরাহ, বিপণন, বিক্রয়, ক্রয়, সংরক্ষণ এবং অ্যালকোহল ধারণকারীর লাইসেন্স থাকতে হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮  সঠিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য এসব বিধি জারি করেছে।

এর আগে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ (লাইসেন্স এবং পারমিট ফি) বিধিমালা-২০১৪ এর অধীনে বার লাইসেন্স প্রদান, পৃথক অ্যালকোহল সেবনের পারমিট পুনর্নবীকরণ এবং অন্যান্য সম্পর্কিত বিষয়গুলির জন্য ফির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছিল।

প্রতিটি বোতলে অবশ্যই স্বাস্থ্য সতর্কতা লেবেল থাকতে হবে। মহাপরিচালকের অনুমোদন থাকলে বার বা ক্লাব ছাড়া যে কোনো ব্র্যান্ডের অ্যালকোহল বিক্রি করা যাবে।

নীতিমালা অনুযায়ী বার, অফ-শপ, অন-শপ এবং দেশি মদের দোকান শুক্রবার, মহরম, শব-ই-বরাত, ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী, শব-ই-কদর, ঈদ-উল-ফিতরের দিন বন্ধ রাখতে হবে। ঈদুল আযহাসহ অন্যান্য সরকারি ছুটিতেও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং ক্লাবগুলোতে বার স্থাপনের জন্য শর্তাদি নির্ধারণ করা হয়েছে- কমপক্ষে ২০০ জন অনুমোদিত সদস্য থাকা, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল, থিম পার্ক এবং সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো, যেখানে বিদেশি নাগরিকরা থাকেন।

পাঁচ তারকা এবং তার উপরের মানের হোটেলগুলো বার স্থাপনের লাইসেন্স পাবে।

বিদেশি রেমিট্যান্স উপার্জনকারী শুল্কমুক্ত দোকানগুলো অ্যালকোহল আমদানি করতে পারে। রেস্তোরাঁ, হোটেল, ক্লাব বা বারগুলিকে তাদের প্রয়োজনীয় অ্যালকোহলের ৪০ শতাংশ বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন থেকে নিয়মিত হারে শুল্ক-কর পরিশোধ করে বা আমদানির মাধ্যমে সংগ্রহ করতে হবে। বাকি ৬০ শতাংশ স্থানীয় উ’স থেকে সংগ্রহ করা যেতে পারে।

২০০ জনের বেশি অনুমোদিত সদস্য থাকা ক্লাবগুলো সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ বিদেশি মদ আমদানি করতে পারবে এবং বাকি ৬০ শতাংশ স্থানীয় উৎস থেকে সংগ্রহ করতে হবে।

অ্যালকোহলের অনুমোদিত ধারক বা লাইসেন্সধারীদের আকৃষ্ট করার জন্য বাণিজ্যিক বা অন্যান্য উদ্দেশ্যে অন্য ব্যক্তিদের অ্যালকোহল পণ্য প্রদর্শনের অনুমতি দেওয়া হবে না।

বিধিতে বার এবং মদ বিক্রির দোকান খোলার এবং বন্ধ করার সময়ও নির্দিষ্ট করা হয়েছে।

বিধিতে হোমিওপ্যাথিক ওষুধ আমদানিকারক, চা বাগানের শ্রমিক এবং পার্বত্য অঞ্চলের আদিবাসীদের জন্য অ্যালকোহল বা এ ধরনের পণ্য আমদানি, ব্যবহার এবং সেবনের জন্য পৃথক নির্দেশিকা রয়েছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মাসুদ হোসেন বলেন, নতুন নিয়মে অ্যালকোহল সেবনের বয়স সীমাবদ্ধতাসহ বিভিন্ন বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।

এ খাতে শৃঙ্খলা আনতে মদ বিক্রির অনুমতি দেওয়ার শর্ত আরোপ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

অ্যালকোহল আদিবাসীদের চিকিৎসা, ওষুধ উৎপাদন এবং সেবনের জন্যও ব্যবহৃত হয়। তাই এর অপব্যবহার পরীক্ষা করার জন্য একটি স্পষ্ট নির্দেশিকা থাকা উচিত। আর পার্বত্য অঞ্চলের আইন ও অ্যালকোহল নীতিতে অসঙ্গতি ছিল, যা বিধিতে সমাধান করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৮ ঘণ্টা, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
এসই/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।