ঢাকা, সোমবার, ৭ আশ্বিন ১৪৩১, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মা-মেয়ে হত্যা: সেই যুবক রিমান্ডে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪২ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০২২
মা-মেয়ে হত্যা: সেই যুবক রিমান্ডে

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ শহরের ডালপট্টি এলাকায় ‘মাতৃভবন’ নামে বহুতল ভবনের একটি ফ্ল্যাটে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে ধারালো ছুরিসহ আটক আল জুবায়ের স্বপ্নীলকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে।

বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে হত্যাকাণ্ডের শিকার রুমা চক্রবর্তীর স্বামী রামপ্রসাদ চক্রবর্তী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আল জুবায়েরকে আদালতে পাঠায়। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নূর মোহসীন শুনানি শেষে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আল জুবায়ের স্বীকার করেছেন অবসাদগ্রস্ত জীবনে টাকা ও স্বর্ণের জন্যই তিনি হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১ মার্চ) দুপুরে ডালপট্টিতে ছয়তলার ফ্ল্যাটে ঢুকে মা রুমা চক্রবর্তী ও তার সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ঋতু চক্রবর্তীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করে হত্যা করে জোবায়ের।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, রামপ্রসাদ ‘মেসার্স ইসলাম ট্রেডার্সে’ চাকরি করেন। মঙ্গলবার (১ মার্চ) দুপুর আড়াইটায় বাড়ির মালিকের ভাগ্নে জানান, তাদের ফ্ল্যাট যে ভবনে, সেটির নিচে অনেক লোক জড়ো হয়েছেন। তিনি গিয়ে দেখেন, ভবনের গেটের বাইরে থেকে তালা দিয়ে রেখেছে। ভেতর থেকে তার ছেলে হৃদয়ের স্ত্রী শিলা কান্নাকাটি করছেন। শিলা জানান, তাদের ফ্ল্যাটে ঢুকে এক যুবক রুমা ও ঋতুকে ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়েছে। শিলাকে হত্যার জন্য রান্নাঘরের বটি হাতে নেন হামলাকারী।  

তবে শিলা কৌশলে সেই বটি ছিনিয়ে নিয়ে ফ্ল্যাট থেকে বের হয়ে নিচে নামেন। হামলাকারী যুবক তাকে ধাওয়া করে নিচে নামে, তবে ততক্ষণে ভবনের অন্য লোকজন এসব টের পেয়ে বাইরে থেকে ভবনের গেট আটকে দেয়। পরে ওই যুবক ফের ছয় তলার ফ্ল্যাটটিতে ফিরে যান। শিলার কাছে এসব শুনে, তিনি স্ত্রী রুমার মোবাইল ফোনে কল করলে তা রিসিভ করে ওই যুবক জানতে চান, টাকা-গয়না কোথায় আছে। পরিচয় জানতে চাইলে তিনি কলটি কেটে দেন। ততক্ষণে পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়। পুলিশসহ তিনি ফ্ল্যাটে গিয়ে ওই যুবককে আটক করে ও মরদেহ উদ্ধার করে।

জুবায়ের শহরের পাইকপাড়া পুল এলাকার লবণ ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন মিয়ার ছেলে। তিনি জানান, তার ছেলে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হন। তবে আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় পড়ালেখা চালাতে পারেনি। এক দেড় মাস ধরে তার ছেলে অস্বাভাবিক আচরণ করছিলেন।

মঙ্গলবার (১ মার্চ) রাতে জুবায়েরকে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আমির খসরু বলেন, ‘জুবায়েরকে আমরা ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তিনি স্বীকার করেছেন, তার নিজের চলার জন্য টাকার দরকার। এ কারণে বড় বাড়িটি তিনি টার্গেট করেন। ছয়তলা ভবনের একটি ফ্ল্যাটে কলিংবেল বাজিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ওই ফ্ল্যাটের কেউ দরজা খোলেননি। তখন পাশের রামপ্রসাদ চক্রবর্তীর ফ্ল্যাটের কলিংবেল চাপেন তিনি। ওই ফ্ল্যাটের দরজা খুললে ভেতরে ঢুকেই রুমার গলা চেপে ধরেন জোবায়ের। এ সময় রুমার গলার মালা তিনি ছিনিয়ে নেন। এরপর ছুরি দিয়ে রুমাকে হত্যা করেন। রুমার মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা ঋতু এগিয়ে এলে তাকেও ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন। ’

বাংলাদেশ সময়: ২১৪২ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০২২
এমআরপি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।