ফরিদপুর: ফরিদপুরের সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসিকুজ্জামানকে ঢাকা আর্মড পুলিশ হেডকোয়ার্টারে বদলি করা হয়েছে। বদলির আদেশে তাকে আগামী ৯ এপ্রিলের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদানের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) সুমিনুর রহমান এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
থানা সুত্রে জানা গেছে, অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসিকুজ্জামান সালথা থানায় ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল যোগদান করেন। তার যোগদানের পরদিন ৫ এপ্রিল লকডাউনের মধ্যে সালথা এলাকায় জরিমানা আদায় নিয়ে ম্যাজিট্রেট ও পুলিশের সাথে সংঘর্ষ হয়। সে ঘটনায় সালথা এলাকার গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে সালথা ইউএনও অফিস ও বাসভবন, সালথা থানা ও উপজেলা ভবনে তান্ডব চালিয়ে ভাংচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়।
এদিকে গত ২৭ মার্চ জেলার ৬ নং আমলী আদালতে তিনি সহ এক এসআই এর বিরুদ্ধে একটি চাঁদাবাজি মামলা করেন সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মুরাদ মোল্লা।
মামলায় তিনি সালথা থানার ওসি মো. আসিকুজ্জামান ও উপপরিদর্শক (এসআই) মো. হান্নানের বিরুদ্ধে মারধর, চাঁদাবাজি ও হুমকি-ধমকির অভিযোগ তুলেছেন। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন।
এজাহারে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর ইউপি নির্বাচনের আগে ওসি আশিকুজ্জামান তার কাছে বিভিন্ন সময় চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে নির্বাচন করতে দেয়া হবে না বলে হুমকি দেন। সে সময় তিনি ওসিকে ৭৫ হাজার টাকা দেন। পরে আরও ১ লাখ টাকা চাইলে তা তিনি দেননি।
বাদীর অভিযোগ, এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তার নামে তিনটি মিথ্যা মামলা দেয়া হয়। গত ১৪ মার্চ মধ্যরাতে তার ভাই জিহাদকে ঘর থেকে তুলে থানায় নিয়ে যান ওসি। পরদিন তিনি থানায় গিয়ে এর কারণ জানতে চাইলে ওসি তাকে ২৫ হাজার টাকা দিতে বলেন। না দিলে মিথ্যা মামলা দিয়ে জিহাদকে কারাগারে পাঠানোর হুমকি দেন। তিনি টাকা না দিয়ে ফিরে যান। মুরাদ আরও অভিযোগ করেন, ওসির নির্দেশে এসআই হান্নান তার ভাই জিহাদকে থানায় নির্যাতন করেন। মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। জামিন নিয়ে গত ২৩ মার্চ জিহাদ মুক্ত হলেও মারধরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এমনকি চলাফেরাও করতে পারছিলেন না। পরে তাকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ প্রসঙ্গে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) সুমিনুর রহমান বলেন, শুক্রবার (১ মার্চ) সন্ধ্যায় তার বদলি আদেশ এসেছে। তিনি (ওসি) আরো কয়েক মাস আগে নিজেই বদলির জন্য আবেদন করেছিলেন। এটা নিয়মিত বদলির আদেশ। আগামী ৯ এপ্রিলের মধ্যে এখান থেকে রিলিজ নিয়ে ঢাকায় আমর্ড পুলিশ ব্যাটেলিয়ন হেডকোয়ার্টারে যোগদানের আদেশ দেওয়া হয়েছে। এটা স্ট্যান্ড রিলিজ না। তবে তিনি যদি ৯ এপ্রিলের মধ্যে আদেশ অনুযায়ী যোগদান না করেন তাহলে ১০ এপ্রিল থেকে এটা স্ট্যান্ড রিলিজ বলে গণ্য হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০০৫২ ঘণ্টা, ০২ এপ্রিল, ২০২২
আরইউ