ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সুবর্ণচরে আগাম তরমুজের বাম্পার ফলন

ফয়জুল ইসলাম জাহান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০২২
সুবর্ণচরে আগাম তরমুজের বাম্পার ফলন বাজারে নেওয়ার জন্য ক্ষেত থেকে তরমুজ তুলে সাজিয়ে রাখা হয়েছে

নোয়াখালী: রসালো, পুষ্টিগুণ ও স্বাদে অনন্য গ্রীষ্মকালীন তরমুজ। বাড়ছে গরম, আসছে রমজান।

এই দুই বিষয়কে সামনে রেখে তিন মাস আগ থেকেই নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার কৃষকরা আগাম তরমুজের চাষ করেছেন।

অনুকূল আবহাওয়া, সরকারি প্রণোদনা ও কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় আগাম তরমুজ চাষে বাম্পার ফলনের পাশাপাশি কয়েকগুণ লাভের আশা করছেন কৃষকরা।

মৌসুমের শুরুতে ব্যাপক চাহিদা ও বাজার মূল্য ভালো পাওয়া যায় বলে কৃষকরাও আগাম তরমুজ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে এই উপজেলায় তরমুজের আবাদ বেড়েছে চার গুণ। মার্ভেলাস, গ্লোরী জাম্বু, ব্ল্যাক জাম্বু, বারি, ভিক্টর সুপার, গ্রীণ ডায়মন্ড, সুপ্রীম সুপারসহ নানা জাতের তরমুজ আবাদ করেছেন কৃষকরা।

উপজেলার চরজুবলী ইউনিয়নের পশ্চিম চরজুবলী গ্রামের কৃষক আবদুল মতিন বাংলানিউজকে জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতাধীন এনএফএলসিসি প্রকল্পের আর্থিক সহায়তায় দুই একর জমিতে আগাম তরমুজ আবাদ করেছেন তিনি। স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে বীজ, সার, কীটনাশক ও আন্তঃপরিচর্যা বাবদ নগদ অর্থ সহায়তা পান এবং বিভিন্ন সময়ে কৃষি কর্মকর্তারা তাকে পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

তিনি আরও জানান, দুই একর জমিতে তরমুজ চাষে তার খরচ হয়েছে এক লাখ টাকা। ফসল বিক্রি করতে পারবেন ৩ লাখ টাকার। এতে খরচ বাদে তিনি ২ লাখ টাকা লাভ করার আশা করছেন।

কৃষক আবদুল মতিনের মতো উপজেলার চরজুবলী, চরওয়াপদা, চরকার্ক, মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের তরমুজ চাষি এনাম হোসেন, আজগর হোসেন, মো. হাশেম, আবুল কালামও একই আশা করছেন।

সুবর্ণচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ বাংলানিউজকে জানান, ২০২১-২০২২ অর্থবছরে সুবর্ণচর উপজেলায় ৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ করা হয়। যা বিগত ২০২০-২০২১ অর্থবছরের তুলনায় ৩ হাজার ১০৫ হেক্টর বেশি। চলতি অর্থ বছরে আবাদ বেশি হওয়ার অন্যতম কারণ গত অর্থবছরে বাজারমূল্য বেশি পাওয়া।

তাছাড়া সমানে রমজান মাস থাকায় কৃষকরা বেশি লাভের আশা করছেন।

দেশের অন্যান্য জেলার তরমুজ থেকে স্বাদে-গুণে নোয়াখালীর তরমুজের প্রশংসা করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নোয়াখালীর উপ-পরিচালক মো. শহীদুল হক বলেন, আইলানা আইলানারে বন্ধু তরমুজের সময় আইলানা, নোয়াখালীর তরমুজ খাইয়া প্রাণটা কেন জুড়াইলানা।

বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার কৃষির উন্নয়নে আর্থিক প্রণোদনা, তথ্য-প্রযুক্তি ছাড়াও কৃষকদের কম খরচে অধিক ফলনে লাভবান হওয়ার নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এর একটি হলো উচ্চমূল্যের ফসল তরমুজের আগাম আবাদ।

কৃষকরা যেন রোগবালাইমুক্ত তরমুজ আবাদ করতে পারেন, সেজন্য কৃষি অফিসের একাাধিক টিম মাঠপর্যায়ে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছেন। আগাম তরমুজ আবাদে প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকরা সে সুফল পাবেন বলে আশা করছেন কৃষি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

প্রসঙ্গত, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রাম ও চাঁদপুর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০২১-২০২২ অর্থবছরে সুবর্ণচরে গ্রীষ্মকালীন উচ্চমূল্যের ফসল তরমুজের আবাদ বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০২২
জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।