সাভার, (ঢাকা): সাভারে জরিমানার টাকা দিতে না পেয়ে নাজমুল কাজী (৩০) নামে এক রিকশাচালক আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
তবে থানা পুলিশের দাবি, ওই যুবকের রিকশা হাইওয়ে থানা পুলিশ নেয়নি।
মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) দিনগত রাত ১০টার দিকে উপজেলার জালেশ্বর এলাকায় ভাড়া বাসা ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মৃত নাজমুল খুলনার পাইকগাছা উপজেলার সবুর কাজীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, এর আগেও একবার নজমুলের রিকশা পুলিশ ধরে তিন হাজার টাকা জরিমানা করেছিল। আজকেও পুলিশ ধরেছে। কিন্তু নাজমুল জরিমানার টাকা দিতে পারেননি দেখে পুলিশ রিকশাটা থানায় নিয়ে গেছে। নাজমুল জানিয়েছেন তার রিকশা পুলিশ থানায় নিয়ে গেছে। তিন হাজার টাকা লাগবে গাড়ি ছাড়ায়ে আনতে। সেই টাকা তার কাছে নেই বিধায় তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে তার পরিবার এটাই জানিয়েছেন।
নিহত নাজমুলের স্ত্রী নাজমা বলেন, নাজমুলের কাছে এ ঘটনা শোনার পর। আমি আমতলার রিকশার গ্যারেজে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে জানতে পারি, আমার স্বামীর রিকশা নাকি কলোনি থেকে পুলিশে ধরে ছিল। আমি শ্বশুরের কাছ থেকে তিন হাজার টাকা নিয়ে থানায় গিয়েছিলিাম গাড়ি ছাড়াতে। কিন্তু গ্যারেজ মালিক বলেছেন নাজমুলকে ছাড়া গাড়ি দেবে না। এজন্য আবার বাসায় ওকে নিতে এসে দেখি ঘরের দরজা মারা। ঘরের একটুখানি ফাঁকা আছে, সেখান দিয়ে তাকিয়ে দেখি তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে আছেন।
সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হক বাংলানিউজকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহটি দেখতে পাই। একটি কাপড়কে পেঁচিয়ে রশির মতো বানিয়ে সেটায় ফাঁস লাগিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
জানা গেছে, ছেলেটা মানসিকভাবে অসুস্থ ও বদমেজাজি ছিলেন। এর আগেও তিনি বিষপান করেছিলেন। উত্তেজিত হয়ে আজকেও হয়তো এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, তার রিকশাটি হয়তো চোরে নিয়ে গেছে। কারণ হাইওয়ে পুলিশ রিকশা নেয়নি। কিন্তু তিনি বাসায় গিয়ে বলেছেন পুলিশ নিয়েছে। পরে বউ বলেছেন চলো পুলিশের কাছে যাই। কিন্তু তিনি যায়নি। তার স্ত্রী টাকা ম্যানেজ করে বাসায় ফিরে দেখে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। আমরা মরদেহটি উদ্ধার করেছি। তার স্ত্রী বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সাভার হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা আজ কলোনি থেকে এমন কোন রিকশা আটক করিনি। জানাও নেই বিষয়টি। আর রিকশা ধরলে তো জরিমানা তিন হাজার না, দুই হাজার ৪শ টাকা। সেটা থানায় দিতে হয় না। ইউক্যাশ থেকে দিতে হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৭ ঘণ্টা, ০৫ এপ্রিল, ২০২২
এসএফ/এএটি