ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রাজবাড়ীতে স্কুল শিক্ষিকার রহস্যজনক মৃত্যু, স্বামী-ছেলে আটক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২২
রাজবাড়ীতে স্কুল শিক্ষিকার রহস্যজনক মৃত্যু, স্বামী-ছেলে আটক স্বজনের আহাজারি।

রাজবাড়ী: রাজবাড়ী জেলা সদরের বসন্তপুর ইউনিয়নে পূরবী ইসলাম (৪৫) নামে এক স্কুল শিক্ষিকার মৃত্যুতে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।  

এ ঘটনায় শিক্ষিকার স্বামী কোলা সদর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরহাদ বিশ্বাস ও ছেলে তাহারাত হাসান লিমন অর্ণবকে (২২) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সদর থানায় নিয়ে এসেছে পুলিশ।

শুক্রবার (৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে পূরবীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত পূরবী ইসলাম সদরের কোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা।

শনিবার (৯ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নিহতের মরদেহ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে পারিবারিক সদস্য ও শিক্ষক সমিতির নেতাকর্মীরা ছুটে আসেন।  

নিহত শিক্ষিকার ছোট ভাই মেহেদী হাসান বলেন, আমার বোন প্রায় দুই যুগ ধরে শিক্ষকতা করেন। আমার ভাগ্নে অর্ণব মাদকাসক্ত। সে মাদকের টাকার জন্য তার মায়ের ওপর নির্যাতন করতো। বোনের স্বামী ফরহাদ বিশ্বাস দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়ায় জড়িত বলে জানি। এ নিয়ে ফরহাদ বিশ্বাস আমার বোনকে মাঝেমধ্যে মারধর করতো। তাদের সংসারে অশান্তি লেগেই থাকতো। ঘটনার দিনও আমার বোনকে অনেক শারীরিক নির্যাতন করেছে তারা। আমার বোন কিছুতেই আত্মহত্যা করতে পারে না। আমাদের দাবি আমার বোনকে তার স্বামী ও ছেলে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমরা এ হত্যার বিচার চাই।

নিহতের বোন লিমা আক্তার অভিযোগ করে জানান, আমার বোনকে পরিকল্পিতভাবে তার স্বামী ও ছেলে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। আমরা বোন হত্যার বিচার চাই।

বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির রাজবাড়ী জেলা কমিটির সভাপতি শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান জানান, আমাদের সহকর্মী শিক্ষিকা পূরবী ইসলাম অনেক ভালো একজন মানুষ ছিলেন। তার এমন অস্বাভাবিক মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারছি না। তার মৃত্যু নিয়ে আমরা সন্দিহান। আমাদের ধারণা তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।  

সদর উপজেলা শাখার সভাপতি মো. মানিক জানান, আমারা জেনেছি শিক্ষিকা পূরবীর পারিবারিক কলহ ছিল। তার ছেলে ও স্বামী তাকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতো। তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে বলে আমাদের ধারণা।

বালিয়াকান্দি উপজেলা শাখার সভাপতি ও স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম জানান, আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করছি। শিক্ষিকার মৃত্যুতে আমরা গভীর শোক প্রকাশ করছি।

রাজবাড়ী সদর থানার এসআই রিফাত হোসেন জানান, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় নিহত শিক্ষিকার স্বামী ও ছেলেকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০০৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।