মৌলভীবাজার: বড়লেখায় রুবেল আহমদ (২৮) নামে এক যুবককে হত্যার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শুক্রবার (৮ এপ্রিল) রাতে দিকে বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- বড়লেখা সদর ইউপির কেছরিগুল গ্রামের সাইদুল ইসলাম, আজির উদ্দিন, নাজিম উদ্দিন, মাহমুদুর রহমান ও মাইজপাড়া গ্রামের সুহেল আহমদ।
এই ঘটনায় শুক্রবার রাতেই থানায় মামলা হয়েছে। রুবেলের ছোট ভাই ফয়ছল আহমদ বাদি হয়ে মামলাটি করেছেন।
মামলায় বড়লেখা সদর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার সাবুল আহমদ ও তার ভাই সাবেক মেম্বার সরফ উদ্দিন নবাবসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ১৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
থানা পুলিশ, স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে শুক্রবার (৮ এপ্রিল) জুমার নামাজের সময় বড়লেখা সদর ইউপির কেছরিগুল জামে মসজিদে জামাল আহমদের সঙ্গে বড়লেখা সদর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার সরফ উদ্দিন নবাবের কথা কাটাকাটি হয়। পরে এলাকার লোকজন বিষয়টি সমাধান করে দেন। আসরের নামাজের সময় জামাল আহমদের ছেলে ও ভাতিজাদের সঙ্গে সদর ইউপির মেম্বার সাবুল আহমদের ভাই সরফ উদ্দিন নবাবের ছেলে ও ভাতিজাদের ঝগড়া হয়। ঘটনার সময় রুবেল আহমদ কাজ শেষে বাড়িতে ফিরছিলেন। এ সময় তাকে (রুবেলকে) জামাল আহমদের পক্ষের লোক ভেবে আটকে রেখে মারধর শুরু করেন ইউপির মেম্বার সাবুল আহমদ ও তার ভাই সরফ উদ্দিন নবাব গংরা। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে রুবেল গুরুতর আহত হন। রুবেলকে বাঁচাতে গিয়ে তার ভাই সুমন আহমদও আহত হন। পরে স্থানীয়রা রুবেলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এদিকে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসাপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। ঘটনার পর পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। নিহত রুবেল সদর ইউপির কেছরিগুল গ্রামের মৃত ছয়েফ উদ্দিনের ছেলে। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রী ছিলেন।
রুবেলের চাচাতো ভাই এমরান আহমদ বলেন, আমার চাচাতো ভাই নির্দোষ। কোনো কারণ ছাড়াই তাকে অমানুষিকভাবে নির্যাতন করে তারা হত্যা করেছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত বড়লেখা সদর ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সাবুল আহমদের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
মামলার তদন্তাকারী কর্মকর্তা বড়লেখা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান শনিবার দুপুরে বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় রুবেলের মাথা ও শরীরের বিভিন্নস্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (৯ এপ্রিল) রাতে বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার বলেন, রুবেলের স্বজন ও স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেছেন ইউপি সদস্য সাবুল আহমদ ও তার ভাই-ভাতিজা মিলে রুবেলকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। ঘটনার পর তাদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ বিভিন্নস্থানে চালিয়েছে। ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাতে তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের আদালতে পাঠনো হয়েছে।
অন্য আসামিদেরও গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৭ ঘণ্টা, ১০ এপ্রিল, ২০২২
বিবিবি/এনএইচআর