ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় বেড়েছে শিয়ালের আক্রমণ। গত দু'দিনে উপজেলায় নেকমরদ ইউনিয়নের কুমোরগঞ্জ এলাকায় শিয়ালের কামড়ে অন্তত ৭ জন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, শিয়ালের আক্রমণ থেকে বাঁচতে গ্রামবাসী এলাকায় পাহারার ব্যবস্থা করেছেন, অনেকেই লাঠি হাতে চলাচল করতে শুরু করেছেন।
গত শুক্রবার (৮ এপ্রিল) কুমোরগঞ্জ এলাকায় শিয়ালের আক্রমণের শিকার হয়েছেন বনগাঁও গ্রামের দিনমজুর আনসার, কুমোরগঞ্জ গ্রামের মাজেদা, শরিফা ও নবাব। একই ভাবে শনিবার (৯ এপ্রিল) শিয়ালের আক্রমণের শিকার হন রেহেনা, মমিনুল ও সাজেদা বেগম।
কুমোরগঞ্জ গ্রামের হাসিনা বেগম বলেন, ‘শনিবার সকালে ভুট্টাখেতের পাশে আমার প্রতিবেশী রেহেনা ঘাস তুলছিলেন। এ সময় হঠাৎ একটি শিয়াল এসে তার হাঁটুর নিচে কামড় দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে চিৎকার শুনে আমরা এগিয়ে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই।
সেখানে ভ্যাকসিন দেওয়ার পরামর্শ দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। কিন্তু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকায় বাজার থেকে ১ হাজার ৫৫০ টাকা দিয়ে কিনে রেহেনাকে ভ্যাকসিন না দেওয়া হয়। তিনি এখনও চিকিৎসাধীন আছেন। এলাকার আরও কয়েক জন আহত হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি।
যোগাযোগ করা হলে নেকমরদ ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবুল হোসেন মাষ্টার জানান, গত দুই দিনে ইউনিয়নের কুমোরগঞ্জ এলাকায় কয়েকজনকে শিয়াল কামড়িয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে নারী, পুরুষ ও বৃদ্ধও আছেন। 'আগে শিয়াল কখনও কামড়ায়নি। কিন্তু এখন পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছে না, তাই তারা লোকালয়ে এসে মানুষকে কামড়াচ্ছে।
জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো.নাসিরুল ইসলাম বলেন, শিয়াল সাধারণত ২ কারণে মানুষকে আক্রমণ করে। পর্যাপ্ত খাবার না পেলে বা আক্রমণের শিকার হলে এবং র্যাবিস ভাইরাসে আক্রান্ত হলে। পাগলা শিয়াল কাউকে কামড়ালে, তাকে ক্ষত স্থান পরিষ্কার করতে হবে এবং ডাক্তারের কাছে গিয়ে জলাতঙ্ক টিকা নিতে হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিকা বিষয়ক কর্মকর্তা (এমটিইপিআই) নুরুজ্জামান বলেন, ‘এখানে কুকুর ও শিয়ালের কামড়ের ভ্যাকসিন সাপ্লাই নেই। তাই এসব রোগীদের আমরা ভ্যাকসিন দিতে পারি না। সরকারিভাবে ভ্যাকসিন নিতে হলে ওই রোগীদের ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে যেতে হবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৩ ঘণ্টা, ১০ এপ্রিল, ২০২২
এমএমজেড