ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

হাত-পা বেঁধে নির্যাতন, তবু ছেলেকে ক্ষমা করে দিলেন বৃদ্ধ বাবা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০২৪
হাত-পা বেঁধে নির্যাতন, তবু ছেলেকে ক্ষমা করে দিলেন বৃদ্ধ বাবা

সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশতলা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক অরবিন্দু মণ্ডলকে (৮০) হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে তারই ছেলে বিশ্বনাথ মণ্ডল ও পুত্রবধূ কবিতা মণ্ডলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভিডিওটি দেখে মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পুলিশ আসার খবর পেয়ে নির্যাতনকারীরা বাড়ি থেকে পালিয়েছে বলে জানা গেছে।   

এর আগে সোমবার অবসরপ্রাপ্ত ওই স্কুল শিক্ষকের শারীরিক নির্যাতনের একটি ভিডিও ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। নির্যাতনের শিকার অরবিন্দু মণ্ডল বাঁশতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক।

অরবিন্দ মণ্ডলের মেয়ে অঞ্জনা মণ্ডল বলেন, প্রথমে আমার বাবার গচ্ছিত ১ লাখ টাকা হারিয়ে যায়। পরে আরও ৫০ হাজার টাকা হারিয়ে যায়। টাকাগুলো আমার ভাইয়ের স্ত্রী কবিতা মণ্ডল স্থানীয় এক মেম্বারের কাছে সুদে লাগাতো। টাকা ফেরত চাইলে তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে প্রায়ই বাবাকে নির্যাতন করতেন তারা। সোমবার সকালেও বাবাকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করেন ভাই ও তার স্ত্রী। বিষয়টি স্থানীয় এক যুবক ভিডিও করে ফেসবুকে ছাড়লে প্রশাসনের নজরে আসে।

স্থানীয় একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কবিতা মণ্ডলের সঙ্গে পাশের একজনের অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। অরবিন্দু মণ্ডল এর প্রতিবাদ করতেন। এছাড়া তার গচ্ছিত দেড় লাখ টাকা চুরি করে নিয়েছে পুত্রবধূ কবিতা। টাকাগুলো ফেরত চাইলে তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে অরবিন্দুকে বেঁধে মারপিট করেন। এর আগেও তারা শিক্ষক বাবাকে মারপিট করতেন।  

তবে, এতকিছুর পরেও ছেলে ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে মামলা করতে চান না অরবিন্দু মণ্ডল। তিনি বলেন, আমার ছেলের দুটি সন্তান রয়েছে। তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে আমি তাদের ক্ষমা করে দিয়েছি। তাছাড়া সন্তানের বিরুদ্ধে আমি মামলা করবো কীভাবে?

সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম বলেন, সমাজের একটা বাস্তব অথচ নিষ্ঠুর চিত্র এটি। ভিডিওটা দেখার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়েছিল। বর্তমানে বিশ্বনাথ ও তার স্ত্রী পলাতক রয়েছেন। এ ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৪ ঘণ্টা নভেম্বর ৫, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।