ঢাকা: দেশে এই মুহূর্তে সারের কোনো সংকট নেই বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, আমাদের প্রতিবছর ২৬ লাখ টন ইউরিয়া প্রয়োজন, টিএসপি সাড়ে ৭ লাখ টন, ডিএপিপি সাড়ে ১৬ লাখ টন, এমওপি সাড়ে ৭ লাখ টন লাগে।
মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সার বিষয়ক জাতীয় সমন্বয় ও পরামর্শক কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
এ সময় শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন,কৃষিমন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, কমিটির সদস্য ও জাতীয় সংসদ সদস্য জহিরুল ইসলাম, কৃষি সচিব মো. সাইদুল ইসলাম ও শিল্প মন্ত্রণালয় সচিব, সার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রতিবছরই অর্থবছরের শেষে আমরা আগামী অর্থ বছরের জন্য কী পরিমাণ সার প্রয়োজন সেটি নির্ধারণ করি। এই বিষয়টি বাস্তবায়নের জন্য কী ধরনের নীতি বা কৌশল নেব। যাতে করে কৃষি উৎপাদন কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত না হয়। সার নিয়ে আমাদের কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে। সার না পেয়ে ১৯৯৫ সালে ১৮ জন কৃষককে জীবন দিতে হয়েছে। তারা কোনো সাহায্য চাননি, তারা শুধু ন্যায্যমূল্যে সার চেয়েছিলেন এজন্য তাদের রক্ত দিতে হয়েছে।
তিনি বলেন, এরপর ২০০৩,৪,৫ সহ প্রায় প্রতিবছর সারের সংকট হয়েছে। ডিলারদের কারসাজিসহ সব কিছুর মধ্যেই ত্রুটি ছিল। ফলে সার সংগ্রহ ও বিতরণে চরম অব্যবস্থাপনা ছিল। তবে বর্তমান সরকার তৃতীয় মেয়াদে দেশ পরিচালনা করছে। খাদ্য নিরাপত্তা আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের অর্থনীতির তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের মধ্যে একটি হলো কৃষি। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে কৃষির গুরুত্ব অতীতেও ছিল, আগামীতেও থাকবে। দেশের প্রায় ৭০ ভাগ মানুষের জীবিকা কোনো না কোনোভাবে কৃষির সঙ্গে জড়িত। এজন্য সারের বিষয়টি অনেক গুরুত্ব দিয়ে দেখি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে নির্দেশ দিয়েছেন সার ব্যবস্থাপনা যাতে কোনো সমস্যা না হয়।
তিনি বলেন, করোনা মহামারি ও রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের বিভিন্ন উপকরণ ও কাঁচামাল শিপিং নিয়ে অনেক সংকট তৈরি হয়েছে। তাই বলা হচ্ছে সারা বিশ্বে খাদ্য ঘাটতির সমস্যা দেখা দেবে। কানাডার মতো দেশে মানুষ লাইন ধরে রুটি কিনছে, কাউকে ৫ লিটারের বেশি ভোজ্যতেল দেয় না। এই পরিস্থিতিতে আজকের সভাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কৃষির উৎপাদন আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে, কোনো ক্রমেই আমরা বিদেশের ওপর নির্ভরশীল না হই।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমরা আজকে দীর্ঘক্ষণ পর্যালোচনা করেছি সার নিয়ে। এপর্যন্ত মজুদ অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে টিএসপি, এমওপি ও ডিএপিপি বেশি আছে। ইউরিয়া যেটুকু দরকার সেটাই আছে। তবে সামনে কী হবে সেজন্য আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পৃথিবীর সব দেশেই সারের দাম বাড়লেও বাংলাদেশে সারের দাম বাড়েনি। আজকে আমরা সংগ্রহের পরিমাণ সমান রেখে দাম ঠিক রেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছি এটাই মূল কথা। ৩০ হাজার কোটি টাকা সার সংগ্রহ করতে এ বছর দিতে হবে। আগামী বছর পরিস্থিতি কী হবে আমি জানি না।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০২২
জিসিজি/এসআইএস