ঢাকা, বুধবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

খুমেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২২
খুমেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি

খুলনা: খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে মৃত চিয়ারুন্নেছার মৃত চিয়ারুন্নেছার স্বামী মাওলানা মো. আব্দুর রাজ্জাক।

মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন তিনি।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি মহানগরীর দৌলতপুরের পাবলার মধ্য কারিকার পাড়া পুরাতন জামে মসজিদের ঈমাম। আমার স্ত্রী শুক্রবার (৮এপ্রিল) রাত ২ টার সময় বুকে ও পেটে ব্যাথা নিয়ে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়। তারপর চিকিৎসায় তার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়। পরিবারের সদস্যরা তার দেখাশুনার জন্য হাসপাতালেই অবস্থান করে। তবে ১০ এপ্রিল রাত ১ টার পর থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তখন রোগীর সঙ্গে থাকা দুই ছেলে বারবার কর্তব্যরত ডাক্তারদের ডাকতে থাকে ২ ঘণ্টায় পার হলেও কর্তব্যরত ডাক্তার রোগীর কাছে আসেনি। এ দিকে রোগী যন্ত্রণায় ছটফট করে অবশেষে ডাক্তারদের অবহেলায় রাত ২ টা ৪৫ মিনিটে মৃত্যুবরণ করেন।

তিনি আরও বলেন, মা মারা যাওয়ার পর দুই ছেলে ইন্টার্ন ডাক্তার মনিষ কান্তি দাস ও ডাক্তার প্রিতম কর্মকারকে ডেকে বলে- আপনাদের বারবার ডাকলেও মাকে দেখতে আসলেন না? আপনাদের কেমন বিবেক, আপনাদেরও তো মা আছে আপনাদের মা হলে কি করতেন। এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে ওয়ার্ডবয় ও অন্যান্য কর্মচারীরা মিলে প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন আমার দুই ছেলেকে কিল-ঘুষি ও লাথি মারতে থাকে। তখন আমার শোকাহত দুই ছেলে প্রাণভয়ে দৌঁড়াতে থাকে পিছু পিছু ডাক্তারসহ অন্যান্য কর্মচারীরা লাঠি নিয়ে তাদেরকে মারার উদ্দেশ্যে হাসপাতালের প্রধান ফটক পার করে মুজগুন্নি মহাসড়কের অনেক দূর পর্যন্ত চলে আসে। পরে আমার দুই ছেলে বাসায় চলে আসে। পরবর্তীতে আমি আমার স্ত্রীর মরদেহ নিতে দুই ছেলেসহ হাসপাতালে যাই। তখন ঐ ইন্টার্ন ডাক্তারসহ অন্যান্য সহকারীরা আমার সন্তানকে পুলিশের সামনে মেরে আহত করে এবং তাদের পরিধানের কাপড় চোপড় ছিড়ে ফেলে। পরে তারা সোনাডাঙ্গা থানার পুলিশ কাছে আমার দুই সন্তানকে সোপর্দ করে। এসময় আমি স্ত্রী শোক ও সন্তানদের এমন অবস্থা দেখে দিশেহারা হয়ে পড়ি। এমতবস্থায় আমি বিষয়টি স্থানীয় ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ সামছুদ্দিন আহমেদ প্রিন্সকে জানালে তিনি এবং স্থানীয় মহল্লাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে মেয়রের কাছে যাই। মেয়র ঘটনা শুনে ২ সন্তানকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য সোনাডাঙ্গা থানার ওসিকে অনুরোধ করেন। কিন্তু তারপরও তাদেরকে ছেড়ে না দেওয়ায় খুলনা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার যাওয়ার পরেও মুক্তির কোন শুরাহা না হওয়ায় স্থানীয় কাউন্সিলর এবং মহল্লাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে নতুন রাস্তায় সড়ক অবরোধ করলে তাদেরকে মুক্তি দেওয়া হয় এবং মরদেহ ফেরত দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, ২ ছেলেকে পুলিশ ছেড়ে দেওয়ার পর আমি জানতে পারি তা খুমেকের ইন্টার্ন ডাক্তাররা দের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। আমি মানবিক দিক বিবেচনা করে এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মৃত চিয়ারুন্নেছার ২ ছেলে মো. তরিকুল ইসলাম কাবির, সাদ্দাম হোসেন, ইসলামী আন্দোলনের খুলনা মহানগর কমিটির সেক্রেটারি শেখ মো. নাসির উদ্দিনসহ স্থানীয়রা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২২
এমআরএম/এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।