ঢাকা, বুধবার, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ছিনতাইয়ের উদ্দেশেই চৌগাছায় পুলিশ সদস্যের বাবাকে হত্যা!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২২
ছিনতাইয়ের উদ্দেশেই চৌগাছায় পুলিশ সদস্যের বাবাকে হত্যা!

যশোর: যশোরের চৌগাছা উপজেলায় পুলিশ সদস্যের বাবার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধারের মাত্র ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে ক্লু-লেস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের দাবি করেছে চৌগাছা থানা পুলিশ।  

সোমবার (১১ এপ্রিল) সকালে মরদেহ উদ্ধারের পর রাহিম মণ্ডল (২৪) ও অন্তর হোসেন (১৮) নামে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার রাহিম নওগাঁ সদর উপজেলার শৈলকূপা গ্রামের এবং অন্তর চৌগাছা উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা।

মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) গ্রেফতার দুজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজ।

তিনি জানান, সোমবার রাতে রহিমকে মাগুরা শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে নির্মাণাধীন একটি ভবন থেকে এবং অন্তরকে ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জে তার খালার বাড়ি থেকে আটক করে চৌগাছা থানা পুলিশ। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বার্মিজ চাকু এবং নিহত পুলিশ সদস্যের বাবা সিটি-১০০ মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার দুজন বলেছে, আরেক সহযোগী চৌগাছার সৈয়দপুরের ইয়াসিনসহ (২২) তারা মাগুরা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে একটি নির্মাণাধীন ভবনে রড মিস্ত্রির কাজ করতো। সামনে ঈদের কেনাকাটার জন্য তারা ছিনতাই ও চুরি পরিকল্পনার করে জানিয়ে নওগাঁর বাসিন্দা রাহিম বলে, ‘ কাইয়ূম আমাদের এলাকায় মোটরসাইকেল ভাড়া নিয়ে পরে গলা ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। ’ তখন তিনজনে মিলে কাইয়ূমের মোটরসাইকেল কেড়ে নেওয়ার পরিকল্পনা  করে তারা। পরিকল্পনা অনুযায়ী মাগুরা থেকে রোববার (১০ এপ্রিল) রাতে যশোর শহরের পালবাড়ি নেমে কাইয়ূমকে মোবাইলে ডেকে আনা হয়। এরপর কাইয়ূমসহ চারজন এক মোটরসাইকেল উঠে চৌগাছার সৈয়দপুর গ্রামের একটি মাঠে হত্যাকাণ্ডের স্থানে পৌঁছে কাইয়ূমকে থামতে বলে। কাইয়ূম গাড়ি দাঁড় করানোর পরই ইয়াসিন মোটরসাইকেল লক করে চাবি নিয়ে নেয়। এরপর ভয় দেখিয়ে বলা হয়, ‘তোর গাড়ি আর টাকা নেওয়ার জন্য আমরা এখানে এনেছি। কাছে যে টাকা আছে দিয়ে দে। ’ তখন কাইয়ূম নিজের কাছে থাকা টাকা দিয়ে দেয়। পরে ইয়াসিনের নির্দেশে অন্তর ছুরি দিয়ে কাইয়ূমের গলাকেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে মাগুরায় গিয়ে মোটরসাইকেলটি বিক্রির চেষ্টা করছিল। এরইমধ্যে সকালে গলাকাটা মরদেহ উদ্ধারের পর পুলিশ বিভিন্ন স্থানে বার্তা পাঠিয়ে দেয় এবং মোবাইল ট্রাকিংয়ের মাধ্যমে জানতে পারে মোটরসাইকেলটি নিয়ে তারা মাগুরার দিকে গেছে। সেই সূত্র ধরেই মাগুরা শহর থেকে রাহিমকে গ্রেফতারের পর তার স্বীকারোক্তিতে মোটরসাইকেল উদ্ধার করে এবং কালীগঞ্জ থেকে অন্তরকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, কাইয়ূম ওই এলাকায় রাত-বিরাতেও মানুষকে মোটরসাইকেল নিজ বাড়িতে পৌঁছে দিতেন। ওই তিন কিশোর সেই সুযোগ নিয়ে কাইয়ূমকে হত্যা করে।

চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম সবুজ বাংলানিউজকে বলেন, ক্লু-লেস হত্যাকাণ্ডটির মরদেহ উদ্ধারের ১২ ঘণ্টার মধ্যে রাহিম ও অন্তরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছে মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের উদ্দেশে পরিকল্পিতভাবে তারা এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে।

তিনি বলেন, নিহত কাইয়ূমের স্ত্রীর করা হত্যা মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২২
ইউজি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।