ঢাকা, সোমবার, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০৮ জুলাই ২০২৪, ০০ মহররম ১৪৪৬

জাতীয়

গরু চোর ধরতে গিয়ে অন্তঃসত্ত্বার পেটে লাথি দিয়ে মারধর!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৬ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২২
গরু চোর ধরতে গিয়ে অন্তঃসত্ত্বার পেটে লাথি দিয়ে মারধর!

ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের গৌরীপুরে গরু চুরি মামলার আসামি ধরতে গিয়ে রিপা আক্তার (২৫) নামে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক নারীকে পেটে ও পিঠে লাথি মেরে আহত করার অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম এমদাদ হোসেন।

তিনি গৌরীপুর থানায় উপ-পরিদর্শক (এসআই) পদে কর্মরত।  

বৃহস্পতিবার (১১ মে) দুপুরে উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আহত গৃহবধূ রিপা আক্তার গ্রেফতারকৃত গরু চুরি মামলার আসামি আবুল হাসেমের স্ত্রী। তিনি স্থানীয় আবুল বাসার লিটনের ছেলে।  

ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূর শ্বশুর আবুল বাশার লিটন বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার ছেলেকে পুলিশ ধরতে এলে আমার পুত্রবধূ রিপা পুলিশের পা ধরে ‘ভাত খাওয়া শেষে’ তাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানায়। তখন দারোগা এমদাদ তাঁর পেটে ও পিঠে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেন। পরে উঠে এসে রিপা আবারও পা ধরতে গেলে ওই দারোগা তাকে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে লাঠি দিয়ে মারধর করেন। এসময় আমি ঠেকাতে গেলে আমাকেও মারধর করে ছেলেকে ধরে যায়। এরপর রিপা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। বর্তমানে রিপা ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে। ’

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য নবী হোসেন বলেন, এলাকার গরু চুরির ঘটনায় মামলায় আবুল হাসেমকে সন্দেহজনকভাবে আসামি করা হয়। ওই মামলায় আবুল হাসেমকে পুলিশ ধরতে তাঁর চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীসহ বাবা-মাকে মারধর করেছে বলে শুনেছি।

অন্তঃসত্ত্বা রিপা আক্তার জানায়, পুলিশ যখন আমার স্বামীকে ধরতে যায়, তখন তিনি ভাত খাচ্ছিলেন। এসময় পুলিশ তাকে মারতে মারতে টেনে হিঁচড়ে ঘর থেকে বের করলে আমি পুলিশের পা ধরে বলি, ‘স্যার ভাত খাওয়া শেষ হলে ধরে নিয়ে যান। তাকে ভাত খাওয়ার সময় দেন। ’

তখন এমদাদ নামে এক দারগা আমাকে দুটি লাথি মেরে মাটিকে ফেলে দেয়। পরে উঠে গিয়ে আবারও তাদের পা ধরতে গেলে আবারও আমাকে পেটে ও পিঠে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দিয়ে হাতে থাকা লাঠি দিয়ে আমার মাথায় তিন থেকে চারটি আঘাত করেন। এ সময় আমার শ্বশুর-শ্বাশুড়ি ফেরাতে এলে তাদেরও ও মারধর করে।

তবে এ বিষয়ে গৌরীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এআই) এমদাদের নম্বরে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি।

গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকী বলেন, আসামি ধরতে গিয়ে কাউকে মারধর করা হয়নি। তবে যেখানে আসামি ধরতে গিয়েছিল বৃষ্টি হওয়ায় সে জায়গাটা কর্দমাক্ত ছিল। এসময় আসামি ধরার চেষ্টা করলে তারা দা নিয়ে আসামি ছাড়িয়ে নিতে আসেন। এতে ধস্তাধস্তি হলে ওই নারী পড়ে যান। তবে ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা কী না বিষয়টি আমার জানা নেই।

এ বিষয়ে গৌরীপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশষ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বৃষ্টি হওয়ায় ঘটনাস্থলটি কর্দমাক্ত ছিল। আসামি গ্রেফতারের সময় তাঁর স্ত্রী পুলিশের পা ধরতে এসে পড়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে এটি একটি দুর্ঘটনা বলে মনে করছি। তবে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেলে ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেম সময়: ১২১৯ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।