বাগেরহাট: বহু সুবিধার পদ্মাসেতু এবার সংবাদপ্রেমীদের জন্য সুখবর নিয়ে আসছে। যারা প্রতিদিন সকালে পত্রিকার খবর পড়তে ভালোবাসেন তাদের জন্যও অপেক্ষার অবসান ঘটছে।
দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলায় জাতীয় পত্রিকাগুলো পৌঁছতে সময় লাগতো। কিন্তু পদ্মা সেতুর কল্যাণে এ সমস্যা মিটে যাচ্ছে। রাজধানীতে ভোর হতেই যেমন পাঠকরা হাতের কাছে পত্রিকা পান, দক্ষিণাঞ্চলের জেলা-উপজেলাসমূহতেও তা নাগালে পাওয়া যাবে।
সোহেল রানা নামে এক পাঠক জানান, অনেক সময় সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও আমরা পত্রিকা পেতাম না। কিন্তু পদ্মা সেতু হয়ে গেলে চিরতরে সেদিন হারিয়ে যাবে। খুব দ্রুতই আমরা সব খবর জানতে পারব।
হকার মামুন বলেন, ঝড়-বৃষ্টি, জলোচ্ছ্বাস, কুয়াশা, নদীর স্রোত বিভিন্ন কারণে পত্রিকা আসতে অনেক দেরি হতো। আমরা এজেন্টদের কাছে তীর্থের কাকের মতো বসে থাকতাম কখন পত্রিকা আসে! পাঠকরা ফোনের পরে ফোন দিতেন। সে দিন শেষ হচ্ছে।
সংবাদকর্মী এসএস শোহান বলেন, ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলে যেসব পত্রিকা আসে, তার জন্য আমাদের সন্ধ্যা সাতটার আগেই নিউজ পাঠাতে হতো। কারণ ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে পত্রিকা ছাপাতে পাঠানো হয়। যে কারণে সর্বশেষ আপডেটসহ পত্রিকা আমরা পেতাম না। এখন যখনই পত্রিকা ছাপানো হোক না কেন, আমরা সকালেই পত্রিকা পাব।
বাগেরহাট সদর উপজেলার বৈটপুর এলাকার এনামুল আহমেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা অবস্থাতেই আমার পত্রিকা পড়ার অভ্যাস। এখন চাকরি করি, তাই বাসায় পত্রিকা রাখি। কিন্তু কষ্টের বিষয় হচ্ছে, সকালের পত্রিকা আমরা পাই দুপুরে, কোনো কোনো দিন আবার বিকেলেও পত্রিকা দেয় হকার। কারণ জানতে চাইলে ফেরির অজুহাত দেওয়া হতো। আশাকরি পদ্মা সেতু চালু হলে ঘুম থেকে উঠেই পত্রিকা দেখতে পাব।
বাগেরহাটের পত্রিকা পরিবেশক মোকাদ্দেস আলী জানান, ঢাকা থেকে প্রকাশিত প্রায় সকল পত্রিকা আমরা এনে হকারদের মাধ্যমে বিক্রি করে থাকি। শীতকালে কুয়াশা ও বিভিন্ন সময় দুর্যোগের কারণে পত্রিকা বিকেলে এসে পৌঁছাত। বিলম্বে আসায় সঠিক সময় পত্রিকা পাঠকদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হত না। সকালের পত্রিকা অনেক সময় বিকেল বা সন্ধ্যায় দিতে হতো। পদ্মা সেতু হলে এ বিড়ম্বনা থেকে আমরা মুক্তি পাব।
বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক অ্যাডভোকেট শাহ আলম টুকু বলেন, একটা সময় ছিল পত্রিকা হাতে পেতাম একদিন পরে। বর্তমানে ফেরি বিড়ম্বনার কারণে প্রায়শই দুপুরের দিকে পাই। দুপুরে পত্রিকা হাতে পাওয়ার কারণে অনেকে পত্রিকা কিনতে চায় না। এখন আর ফেরি বিড়ম্বনা থাকবে না। সকালে পত্রিকা হাতে পেলে পাঠকও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫২ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০২২
এমজে