বরগুনা: পূর্ণিমার জোয়ারে বিশখালী নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে দুই-তিন ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে জেলার নিম্নাঞ্চলের ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
শুক্রবার (১৫ জুলাই) বিষখালি নদীতে পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পূর্ণিমার জোয়ারে প্লাবিত এলাকাগুলোতে বিশুদ্ধ পানির খোঁজে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে যেতে দেখা গেছে শতাধিক মানুষকে। গ্রামগুলোর অধিকাংশ ডিপ টিউবয়েল পানির নিচে তলিয়ে থাকায় উঁচু স্থানের টিউবয়েল থেকে পানি সংগ্রহ করছেন সবাই। রান্না ও খাওয়ার পানির সংকট দেখা গেছে। জোয়ারের পানি নামতে না নামতেই আবারো পানি উঠে তলিয়ে যায় গ্রামের পর গ্রাম।
নিদ্রাসকিনা গ্রামের আকলিমা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, ঘরে ৪ দিন যাবত চুলা জ্বলছে না। পানি এখনো কমে নাই। পরিবারে বৃদ্ধসহ তিন শিশু রয়েছে এদের নিয়ে মানবতার জীবনযাপন করছি।
তালতলীর তেতুঁলবাড়িয়া গ্রামের ৬০ বছরের বৃদ্ধা খাদিজা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, পরিবারের সদস্যদের জন্য পাসের এলাকার আত্মীয় বাড়ি থেকে ৪ দিন ধরে খাবার আনছি। এলাকার অধিকাংশ টিউবয়েল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় লবণ পানি ঢুকেছে টিউবয়েলে। তাই খাবার পানি সংকটে এখন হাজারো মানুষ।
বরগুনা সদর উপজেলার মাঝের চর এলাকার বাসিন্দা ইয়াসিন আলী বাংলানিউজকে বলেন, ঘরের অর্ধেক তলিয়ে থাকায় আশ্রয় নিয়েছেন পাটাতনের ওপরে। ঘরে যে শুকনো খাবার ছিল তাও এখন শেষ। এখন খাবারের সন্ধানে যাচ্ছেন গ্রামের এখানে-ওখানে।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপকারী মাহাতাব হোসেন জানান,খাকদোন নদীর পানি পরিমাপ করে দেখা গেছে বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
আমতলী উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপকারী মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, পয়রা নদীর বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে।
বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম বলেন, যে সকল জায়গায় বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ দুর্বল হয়ে গেছে সেগুলো সংস্কার এবং পানি কমে গেলেই তেতুলবাড়িয়া গ্রামের বাঁধ দ্রুত সংস্কারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তালতলী উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম সাদিক তানভীর জানান, এখন পর্যন্ত ১০৭ পরিবারকে শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪১ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০২২
এসআইএস