বরিশাল: রাজধানী ঢাকা থেকে নিঁখোজের ৮ দিন পর চার বছরের শিশু সন্তানকে ফিরে পেয়েছে তার মা-বাবা। জরুরি সেবা নম্বর ‘৯৯৯’-এ কল পাওয়ার পর শিশুটিকে বরিশালের এক বাসা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালে বরিশাল মেট্রোপলিটনের বিমানবন্দর থানা পুলিশ সদস্যরা শিশু সামিয়াকে তার বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেয়।
তবে শিশুটিকে ঢাকার সদরঘাট থেকে বরিশালে নিয়ে এসে যার বাসায় রাখা হয়েছিল সেই এমদাদকে এখনও পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।
থানা পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এমদাদুল নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। তবে কি কারণে তিনি শিশুটিকে পরিবারের কাছে ফেরত দেননি এবং পুলিশকেও বিষয়টি কেন জানায়নি তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল মেট্রোপলিটনের উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) জাকির হোসেন মজুমদার জানান, ঘটনার তদন্তে শিশুটির বরিশালে আনা নিয়ে যদি কোনো সন্দেহজনক কারণ পাওয়া যায়, তাহলে এমদাদুলেল বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত ১১ আগস্ট ঢাকার সদরঘাট থেকে নিঁখোজ হয় সদরখঘাটের ভিখারি আবুল কাশেম ও শারমিন বেগমের ৪ বছরের শিশু কন্যা সামিয়া।
জানা গেছে, সদরঘাটে থাকা অপর এক শিশু ভিখারি ঈসা ৪ বছরের শিশু সামিয়াকে ফুঁসলিয়ে বরিশালে নিয়ে আসে। তখন ঈসার বাবা এমদাদুল শিশুটিকে তার আশ্রয়ে রাখেন।
যদিও এমদাদুল জানান, শিশুটিকে নিয়ে আসার পর ঈসাকে বকাঝকা করেন তিনি, এতে সে বাড়ি থেকে রাগ হয়ে চলে যায়। সামিয়ার কোনো স্বজনের সন্ধান না পেয়ে শিশুটিকে তার নিজের কাছেই রেখে দেন এমদাদ।
স্থানীয় বাসিন্দা কামাল হোসেন জানান, এমদাদের ঘরে সাড়ে ৩ থেকে ৪ বছরের ওই শিশুকে দেখে সন্দেহ হয় তাদের। পরে এমদাদের কাছে শিশুর পরিচয় জানতে চাইলে, তিনি অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে শুরু করেন। এতে সন্দেহ হলে স্থানীয়রা ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে বিষয়টি জানায়।
পরে গত বুধবার (১৭ আগস্ট) দিবাগত রাতে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ এমদাদের বাসায় অভিযান চালিয়ে সামিয়াকে উদ্ধার করে। থানা পুলিশের নারী সদস্যরা প্রথমে শিশু সামিয়াকে তাদের নিজেদের হেফাজতে রাখে এবং পরবর্তীতে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠিয়ে স্বজনদের সন্ধানে নামে।
সামিয়ার বাবা আবুল কাশেম জানান, সন্তান নিঁখোজের ঘটনায় তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করেন। পরবর্তীতে বরিশাল থেকে ৪ বছরের শিশু উদ্ধারের ঘটনাটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা দেখে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তারা।
শিশুটির মা শারমিন বেগম বলেন, পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেই গতকাল রাতে তারা ঢাকা থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। আর আজ সকালে বরিশালে এসে পৌঁছালে পুলিশ তাদের কাছে সামিয়াকে তুলে দেয়।
যদিও সামিয়ার বাবা-মা এমদাদুলের বিরুদ্ধে এয়ারপোর্ট থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি। তবে তদন্তের স্বার্থে এমদাদুলকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমলেস চন্দ্র হালদার।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২২
এমএস/এসএ