ঢাকা: বর্তমানে রাশিয়ার নাগরিকদের ইউরোপ ভ্রমণে বিভিন্ন বিধিনিষেধ রয়েছে। তাই এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ এখন রাশিয়ার পর্যটন প্রেমিদের জন্য একটি আদর্শ জায়গা হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ান সাংবাদিক জর্জি জ্যোতভ।
রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সেগুন বাগিচায় একটি রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশ ভ্রমণে নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি তার বাংলাদেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
জর্জি জ্যোতভ বলেন, এক সপ্তাহের ভ্রমণে আমি বাংলাদেশের সুন্দরবন, কক্সবাজার ও দেশের ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেছি। আমি বিশ্বের ৯৭টি দেশ ভ্রমণ করেছি। কিন্তু বাংলাদেশের মতো এমন বন্ধুপ্রতিম দেশ কোথাও পায়নি। বাংলাদেশের জনগণ অত্যন্ত আন্তরিক। কিছু মানুষ দরিদ্র হলেও তারা খুবই বন্ধু সুলভ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের খাদ্যের দামও কম। তাছাড়া এখানে নিরাপত্তাও অনেক ভালো। সব মিলিয়ে রাশিয়ার পর্যটন প্রেমিদের জন্য বাংলাদেশ একটি আদর্শ জায়গা হতে পারে। যেহেতু বর্তমানে রাশিয়ার নাগরিকদের ইউরোপ ভ্রমণে বিভিন্ন বিধিনিষেধ রয়েছে তাই এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ হতে পারে রাশিয়ানদের জন্য পর্যটনের অন্যতম স্থান। আমি রাশিয়া ফিরে এ বিষয়ে বেশ কিছু লেখাও লিখবো।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্যের প্রশংসা করে জর্জি জ্যোতভ বলেন, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা থেকেও ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশ আদর্শ জায়গা। বিশেষ করে সুন্দরবনের সৌন্দর্য বর্ণনা করার মতো নয়। অন্যান্য দেশের বনগুলো অনেকটা কৃত্রিম। সেই দেশগুলো অনেকটা চিড়িয়াখানার মতো। কিন্তু সুন্দরবনে পরিপূর্ণ প্রাকৃতিক অনুভূতি পাওয়া যায়। যা অনেকটা আমাজন বনের মতো।
বাংলাদেশের পর্যটনের সমস্যা নিয়েও এ সময় কথা বলেন তিনি। তার মতে, কক্সবাজার বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈকত। আমার মনে হয় সেখানে উন্নয়নের অনেক সুযোগ এখনো রয়েছে। কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতের অবকাঠামোগত উন্নয়নের দিকে নজর দেওয়া যেতে পারে। তাছাড়া রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি বাংলাদেশের প্লেন চলাচলের ব্যবস্থা নেই। যদি সরাসরি বাংলাদেশের সঙ্গে রাশিয়ার প্লেন চলাচলের ব্যবস্থা করা হয় সেক্ষেত্রে পর্যটনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিশ্ব দরবারে পর্যটনের দিক থেকে বাংলাদেশকে আরও পরিচিত করানো প্রয়োজন। রাশিয়ার অনেক পর্যটকই জানে না বাংলাদেশ সম্পর্কে। বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিচত করার জন্য বাংলাদেশের মন্ত্রণালয়ের যথেষ্ট কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- ঢাকাস্থ রাশিয়ান হাউসের পরিচালক ম্যাক্সিম দোব্রোখোতভ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রধান প্রশান্ত কুমার বর্মন এবং সিআইএস বিসিআইসির কো চেয়ারম্যান ও গ্লোবাল এক্সপ্লোর লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এইচ এম সাঈফ আলী খান।
জর্জি জ্যোতভ রাশিয়ার সর্বাধিক প্রচারিত দ্য আর্গুমেন্টি ফাক্টি পত্রিকার প্রতিবেদক। একইসঙ্গে তিনি দেশটির বিশিষ্ট ভ্রমণ লেখক।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২
এইচএমএস/আরবি