ঢাকা, বুধবার, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘ট্যানারি এখন দূষিত করছে ধলেশ্বরীকে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২
‘ট্যানারি এখন দূষিত করছে ধলেশ্বরীকে’

ঢাকা: বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, হাজারীবাগের ট্যানারি কারখানাগুলো আগে বুড়িগঙ্গা দূষিত করতো, এখন করছে ধলেশ্বরী নদী।

অন্যদিকে হাজারীবাগ থেকে এখনও পুরোপুরি ট্যানারি বন্ধ হয়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড বিফর্স অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট (এএলআরডি), বালাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ও পানি অধিকার ফোরাম আয়োজিত এ আলোচনা সভায় পাথর ও বালু উত্তোলন নদ-নদীর ক্ষতি ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের বিষয় তুলে ধরেন বক্তারা।

বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বালু মহাল থেকে গত ৪ বছরে আয় ২৫৬ কোটি টাকা। ৬টি নদী ধ্বংস হয়েছে অতিরিক্ত বালু উত্তোলনের জন্যে। জাফলংয়ে পাথর উত্তোলনের নামে প্রতিবছর সরকার রাজস্ব পায় ৬ কোটি টাকা। সোমেশ্বরী নদী থেকে বালু উত্তোলন, জাদুকাটা নদীর বিষয়ে দফায় দফায় আদালতে গিয়েছি। পদ্মা-মেঘনা থেকে বালু উত্তোলন নদী গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে গ্রাম। স্থানীয় পর্যায়ে আন্দোলন হচ্ছে।  

তিনি বলেন, নদী সংরক্ষণের নামে বালু উত্তোলনের অনুমতি পেয়েছিলেন সেলিম খান। অথচ নিজের স্বার্থে সেটা ব্যবহার করেছেন। উচ্চ আদালত বালু উত্তোলনের আদেশ অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন।

কী পরিমাণ বালু উত্তোলন প্রয়োজন, সে অনুযায়ী উত্তোলন করা হচ্ছে কী না সেটা তদারকি করার কেউ নেই বলে মন্তব্য করেন বেলার প্রধান নির্বাহী।

তিনি আরও বলেন, পাথর উত্তোলন করতে গিয়ে মারা গেছে ১০২ জন, সরকারি হিসাবে যদিও ৮১ জন।  

বালুমহাল আইন-২০১০ চালু থাকলেও কার্যকর নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডিসির নেতৃত্বে একটি কমিটি আছে। সেই কমিটি বালু উত্তোলনে শব্দদূষণ, নদীভাঙন, জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হলে ওটা বন্ধ করে দেবে। অথচ সেই কমিটি পরিদর্শনেই যায় না।

হাইকোর্টের রায়কে অভিনন্দন জানিয়ে বেলার প্রধান নির্বাহী বলেন, নদীর ক্ষতি হলে সরকার অভিভাবক হিসেবে দায়ী। হাইকোর্ট কর্মপরিকল্পনা চেয়েছে অথচ সরকার কর্মপরিকল্পনা দেয়নি করোনার অজুহাতে। কিন্তু বালুমহাল চালানোর অনুমতি ঠিকই দিচ্ছে।

তিনি বলেন, হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী ইটিপি চালু করার কথা। এজন্য সরকার-বেসরকারি কমিটিকে সুতার নদী নিয়ে ২ মাস পরপর প্রতিবেদন দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে পরিবেশ বিভাগ ১-২টি প্রতিষ্ঠান বাদে সব প্রতিষ্ঠান ঠিকঠাক ইটিপি চলছে বলে প্রতিবেদন দিয়েছে। আর নদী ধ্বংসের দায় দিচ্ছে ভারত থেকে আসা বর্জ্যের ওপর।  

নদী আমাদের মায়ের মতো দাবি করে তিনি অতি মাত্রায় বালু উত্তোলন বন্ধ করার আহ্বান জানান।

এলআরডির শামসুল হুদা বলেন, পাশের দেশ বাঁধ করছে, নদীর প্রবাহ নষ্ট হচ্ছে।  

নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন বলেন, ঢাকার চারপাশে নদী ট্যানারির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অর্থনৈতিক কারণে বলা হয় চামড়ার ব্যবসা করে অনেক মানুষ ধনী হয়েছে।  অথচ অর্থনৈতিক বিবেচনায় কত ক্ষতি হয়েছে সেটা পরিমাপ করা হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২
এনবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।