রাজশাহী: বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে বিভিন্ন পর্যায়ের গঠিত কমিটিগুলোকে সক্রিয় করার তাগিদ দিলেন রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাবিহা সুলতানা। একই সঙ্গে বাল্যবিয়ের মূল কারণগুলো আবারও নতুন করে খুঁজে বের করে তা সমাধানে সবার সমন্বিত অংশগ্রহণ জরুরি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে পরামর্শ সভা হয়। ওই সভায় এই আহ্বান জানান- অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট।
সভাপতির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাবিহা সুলতানা বলেন, বাল্যবিয়ে রোধে জাতীয় থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটির সক্রিয়করণের এবং নিয়মিত প্রতিবেদন দেওয়ার ব্যাপারে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। আর এখন থেকে জেলা প্রশাসন এই বিষয়টি গুরুত্বসহ মনিটরিং করবে।
ইউনিসেফ-এর সহযোগিতায় অ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট (এসিডি) এই সভার আয়োজন করে। রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাবিহা সুলতানার সভাপতিত্বে পরামর্শ সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন- এসিডি ডিরেক্টর (প্রোগ্রাম) শারমিন সুবরীনা।
সভায় বাল্যবিয়ের সার্বিক পরিস্থিতি, মূল কারণসমূহ এবং বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটি সক্রিয় করার বিভিন্ন দিক উপস্থাপন করেন এসিডি প্রোগ্রাম ম্যানেজার মনিরুল ইসলাম পায়েল।
সভায় করোনাকালে বাল্যবিয়ের প্রভাব নিয়ে প্রাপ্ত গবেষণার ফলাফল নিয়ে মূখ্য আলোচনায় অংশ নেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রফেসর এবং জনসংযোগ প্রশাসক ড. প্রদীপ কুমার পান্ডে।
পরামর্শ সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্যে এসিডির পরিচালক (প্রোগ্রাম) শারমিন সুবরীনা বলেন, বাল্যবিয়ে একটি সামাজিক ব্যাধি। এটি রোধ করতে না পারলে এসডিজির ৫নং অভীষ্ট (লিঙ্গতিত্তিক সমতা ও নারীদের ক্ষমতায়ন) অর্জন বাঁধাগ্রস্ত হতে পারে। আমরা মনে করি বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটির কার্যক্রম সক্রিয় ও জোরদার করলে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে মাইল ফলক তৈরি সম্ভব হবে।
সভায় বক্তারা বাল্যবিয়ে বন্ধে আইনের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করা, বাল্যবিয়ে নিরোধ আইনের যথাযথ প্রয়োগ জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কমিটি কার্যকর ও সক্রিয় করা, বাল্যবিয়ে ও নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে সামাজিক, সাংস্কৃতিক চর্চা, অংশীজনের অংশগ্রহণে সুস্পষ্ট পরিকল্পনা প্রণয়ন, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় এবং বাল্যবিয়ের ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালানোর ওপর জোর দেওয়া হয়।
পরামর্শ সভায় জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ইশতিয়াক মাজনুন ইশতি, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক এটিএম গোলাম মাহবুব, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক কস্তুরি আমিন কুইন, রাজশাহী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন, রাজশাহী জেলা শিশু বিষযক কর্মকর্তা মনজুর কাদের, দৈনিক সোনার দেশ সম্পাদক আকবারুল হাসান মিল্লাত, রাসিক ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুজ্জামান টুকুসহ জেলার বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মকর্তা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, কাজী, ইমাম, শিক্ষক, বেসরকারি সংগঠন এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিসহ এসিডির শিশু ও কিশোর-কিশোরী দলের সদস্যরা বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২২
এসএস/এসএ