মাগুরা: পাটকাঠির বেড়া আর টিনের ছাউনি দিয়ে অস্থায়ী মন্দির তৈরি করে নয় বছর ধরে শারদীয় দুর্গাপূজা করছেন মাগুরা সদর উপজেলার বাঁশকোঠা গ্রামের নারীরা। বাজার করা থেকে শুরু করে পূজার সব কাজ করেন তারা।
পূজা কমিটির সভাপতি অঞ্জলি টিকাদার বলেন, আমাদের কমিটিতে বর্তমানে ১৫ জন সদস্য রয়েছেন। প্রথম বছর যখন পূজা শুরু করি তখন পূজা শেষে আমাদের ২২ হাজার টাকা বেঁচে যায়। তা দিয়ে কালি মন্দিরের পাশে নতুন একটি শিব মন্দির তৈরি করেছি। করোনার দুই বছর আমরা পূজা করেছি স্বল্প পরিসরে।
কমিটির আরেক সদস্য পুষ্প বিশ্বাস বলেন, এ বছর সরকারিভাবে আমরা ৫০০ কেজি চাল পেয়েছি। তাছাড়া আমাদের এলাকার নারীরা আমাদের পূজায় আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে সবকিছুর দাম বেশি হওয়ায় এবার খরচ মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। চাঁদার পরিমাণ অনেক কম। মনে হচ্ছে এ বছর পূজা উঠাতে কষ্ট হয়ে যাবে। গ্রামের এ পূজাটি বাৎসরিক হয়ে যাওয়ায় বন্ধ করতে পারছি না।
মাগুরা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বাসুদেব কুণ্ড বলেন, সব স্থানেই আমরা দেখি পুরুষরা পূজা-পার্বণের আয়োজন করে থাকে। কিন্তু মাগুরা সদর উপজেলার বাঁশকোঠা গ্রামে নয় বছর ধরে একটি পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে যেটা জেলায় ব্যতিক্রম একটি পূজা। যেখানে নারীরা পূজার সব দায়িত্ব পালন করেন। দেখা যায়, ঢাকি, পূজারি, বাজার করা, নিমন্ত্রণ দেওয়া, প্রসাদ বিতরণ, প্রতিমা বির্সজনসহ পূজার সব কাজ এ নারীরা করে থাকেন। আমি মনে করি, এটা ভালো উদ্যোগ। আগামী ১ অক্টোবর মহাষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে ৫ অক্টোবর বিজয় দশমী উৎসবের মধ্য দিয়ে শেষ হবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গাপূজা।
মাগুরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তারিক-উল-হাসান বলেন, হাজার সমস্যা উপেক্ষা করে নারীরা শারদীয় দুর্গাপূজা করছে নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ। সব স্থানে নারীদের ভূমিকা অপরিসীম। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের পূজাকে সার্থক করতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জেলায় এ বছর ৬৯৬টি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গাপূজা। পূজার নিরাপত্তায় আনসার, পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২২
আরবি