ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিশ্বব্যাপী প্রবীণ ব্যক্তিরা অবহেলিত-বৈষম্যের শিকার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০২২
বিশ্বব্যাপী প্রবীণ ব্যক্তিরা অবহেলিত-বৈষম্যের শিকার

ঢাকা: বিশ্বব্যাপী প্রবীণ ব্যক্তিরা ক্রমবর্ধমান হারে অবহেলিত, বঞ্চিত, নির্যাতিত এবং বৈষম্যের শিকার বলে জানানো হয়েছে বিশ্ব প্রবীণ দিবসের আলোচনা সভায়।  

শনিবার (১ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ৩২তম আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় মুল প্রবন্ধে এ কথা বলা হয়।

 

মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি এবং সংসদ সদস্য বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত।

মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, বর্তমানে যারা প্রবীণ রয়েছে অভিজ্ঞতার আলোকে সঠিক কর্মক্ষেত্র তৈরি করে আমরা তাদের অনেককেই কাজে লাগাতে পারি। প্রবীণদের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে। চিকিৎসা সেবার উন্নয়নে বিশ্বব্যাপী মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। প্রবীণ ব্যক্তিরা সমাজের শ্রদ্ধেয় এবং সম্মানিত ব্যক্তি।  

ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ ছিল এ অঞ্চলের কম গড় আয়ুর দেশ। গত পঞ্চাশ বছরে এ অবস্থার অনেক উন্নয়ন ঘটেছে। স্বাধীনতার সময় মানুষের গড় আয়ু ছিল ৪৩ বছর যা এখন ৭৪ বছরে উন্নীত হয়েছে। যেখানে ভারতে ৭১ বছর এবং পাকিস্তানের ৬৫ বছর। দেশে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত মায়েদের গড় আয়ু বাবাদের চেয়ে কম ছিল। আজকের সেই অবস্থারও উন্নতি ঘটেছে। আমাদের মায়েদের গড় আয়ু বাবাদের থেকেও দুই বছর বেশি।  

বিএসএমএমইউ এর সাবেক এ উপাচার্য আরও বলেন, আজকের প্রবীণরা আমাদেরকে জন্ম দিয়েছেন। যত্ন করে লালন পালন করেছেন বর্তমান আধুনিক সমাজ তৈরি করেছেন। কিন্তু বিশ্বব্যাপী প্রবীণ ব্যক্তিরা ক্রমবর্ধমান হারে অবহেলিত বঞ্চিত নির্যাতিত এবং বৈষম্যের শিকার। অথচ আমরা ভাবিনা, আজকের নবীন আগামী দিনের প্রবীণ। বার্ধক্যের হাত থেকে বাচার সাধ্য কারোও নেই।  

নিজের চিকিৎসা জীবনের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, একজন চিকিৎসক হিসেবে আমি জানি, প্রবীণদের অনেকেই দেখতে ও বুঝতে চান না। তাদের সঙ্গে সময় কাটাতে চান না। পরিবারের কাছে প্রবীণ ব্যক্তিরা বাড়তি চাপ বলে মনে করা হয়। এই মানসিকতা পরিবর্তন করে প্রবীণদের প্রতি আন্তরিকতা এবং মমত্ববোধ বাড়াতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রবীণদের মতামত অত্যন্ত কার্যকর।  

তিনি আরও বলেন, ৬০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের প্রতিদিন ন্যূনতম ছয় থেকে সাতটি ওষুধের প্রয়োজন হয়। এই ওষুধের ব্যয় নির্বাহ করা অনেক সন্তানের পক্ষে সম্ভব না। প্রবীণ ব্যক্তিদের ডায়াবেটিস ব্লাড প্রেশার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ওষুধ যদি শতকরা ২৫ ভাগ মূল্যে দেওয়া যায় তাহলে তাদেরকে আমরা আরও বেশি সুস্থ-সবল এবং কর্মক্ষম রাখতে পারব।

এবছর বিশ্ব প্রবীণ দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে পরিবর্তিত বিশ্বে প্রবীণদের সহনশীলতা।  

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি উপস্থিত ছিলেন  সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে সরাসরি উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ।  

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০২২
আরকেআর/এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।