ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিনিয়োগের অভাবে আটকে আছে ভাঙ্গা-পায়রা রেল প্রকল্প

নিশাত বিজয়, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০২২
বিনিয়োগের অভাবে আটকে আছে ভাঙ্গা-পায়রা রেল প্রকল্প

ঢাকা: ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২২ সালের জুনে। কিন্তু পায়রা সমুদ্রবন্দর ও কুয়াকাটাসহ বরিশাল, পটুয়াখালীকে রেল যোগাযোগের আওতায় আনার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা প্রাপ্ত এ প্রকল্পটি অর্থায়নের অভাবে বাস্তবায়নের কাজ আটকে আছে।

ভাঙ্গা জংশন (ফরিদপুর) থেকে বরিশাল হয়ে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা নামের প্রকল্পটি রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা এস. এম. সলিমুল্লাহ বাহার বাংলানিউজকে বলেন, ‘সম্ভাব্যতা সমীক্ষা জুনেই শেষ হয়েছে। এখন আমরা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে অর্থের সংস্থান জরুরি। বিনিয়োগের জন্যে বিভিন্ন জায়গায় প্রস্তাব পাঠিয়েছে রেলওয়ে। আলোচনা চলছে। ’

২০১৬ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া প্রকল্পটি ২০১৮ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। পরে ছয় মাস সময় বাড়িয়ে করা হয়েছিল ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপর প্রথম সংশোধনীতে এর মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়িয়ে করা হয় ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত। এখন নতুন করে আবারও ২০২২ সালের জুন নাগাদ করা হলো।

এ সময় বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রস্তাবনার ভিত্তিতে পরিকল্পনা কমিশনের রেললাইন নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রকল্পের মেয়াদ ভৌত অবকাঠামো বিভাগ এক বছর বাড়িয়েছিল। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের এ প্রকল্পটির মূল ব্যয় ছিল ৪২ কোটি ৯৯ লাখ ৭১ হাজার টাকা। পরে প্রথম সংশোধনীতে ব্যয় বাড়িয়ে করা হয় ৪৯ কোটি ৯৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। যার মধ্যে ৪৯ কোটি ৩০ লাখ ৯০ হাজার টাকাই খরচ করা হয় পরামর্শক সেবায়।

এছাড়া বিজ্ঞাপনে ৮ লাখ, গাড়িভাড়ায় ৩৩ লাখ ১৫ হাজার, অফিস স্টেশনারি ও অন্যান্য খরচ ৮ লাখ, সম্মানী ৮ লাখ, ভ্রমণ ভাতা ৪ লাখ এবং প্রকল্প ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের (পিএমইউ) জন্য অফিস উপকরণে ৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা খরচ করা হয়। প্রকল্পটির আওতায় পায়রা বন্দর থেকে আরও ২৪ কিলোমিটার লাইন নির্মাণের মাধ্যমে কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্রকে রেল যোগাযোগের আওতায় আনতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে সম্ভাব্যতা সমীক্ষাসহ জরিপ ও পথ নকশা নির্ধারণের কাজ শুরু হয়েছে।

এ লক্ষ্যে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের জন্য বাড়তি ব্যয় বরাদ্দের অনুমোদন দিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। এ রেললাইন নির্মিত হলে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন মাইলফলক স্থাপিত হবে। পাশাপাশি রেল যোগাযোগ না থাকার অমর্যাদাকর গ্লানি থেকেও মুক্তি পাবে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত প্রস্তাবিত সিঙ্গেল লেন ব্রডগেজ রেলপথে মোট ১১টি স্টেশনের প্রস্তাব করেছে। প্রস্তাবিত ফরিদপুর বরিশাল-কুয়াকাটা রেলপথে ভাঙ্গায় মূল জংশন থেকে টেকেরহাট, মাদারীপুর, গৌরনদী, বরিশাল বিমানবন্দর, বরিশাল মহানগর, বাকেরগঞ্জ, পটুয়াখালী, আমতলী, পায়রা বিমানবন্দর ও পায়রা বন্দর হয়ে কুয়াকাটা স্টেশনে গিয়ে শেষ হবে। প্রস্তাবিত ওই রেলপথ নির্মাণে একশ মিটার প্রশস্ত ২১১ কিলোমিটার দীর্ঘ ভূমি অধিগ্রহণ করতে হবে। ভাঙ্গা থেকে ফরিদপুর পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার রেলপথ এরইমধ্যে চালু হয়েছে।

অপর একটি লাইন পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় এবং আরেকটি লাইন ভাটিয়াপাড়া থেকে যশোর পর্যন্ত রেলরুটের কাজের অগ্রগতি ৬১ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০২৪ সালের জুনে প্রকল্পটির উদ্বোধনের কথা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০২২
এনবি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।