ঢাকা, রবিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

স্ত্রীকে প্রেম-বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ায় বন্ধুকে হত্যা, পরে টুকরো টুকরো

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০২২
স্ত্রীকে প্রেম-বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ায় বন্ধুকে হত্যা, পরে টুকরো টুকরো

গাজীপুর: গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার পানজোড়া এলাকা থেকে গার্মেন্টকর্মীর টুকরো টুকরো মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় মূল আসামি মো. শাহীনুর রহমান শাহীনকে (৩২) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি সাতক্ষীরার তালা থানার বালিয়া এলাকার মো. মোসলেম উদ্দিনের ছেলে।

গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গত রোববার (২ অক্টোবর) খুলনা সিটি করপোরেশনের সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে।

নিহত সবুজ বার্নাড গোছাল (৩২) গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার ভাষানিয়া এলাকার অমূল্য গনসালভেসের ছেলে।

মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) গাজীপুর পিবিআই’র পরিদর্শক মো. হাফিজুর রহমান জানান, কালীগঞ্জের পানজোরা এলাকায় পূর্বাচল অ্যাপারেল গার্মেন্টে কিউসি পদে চাকরি করতেন সবুজ বার্নাড গোছাল। একই কারখানায় চাকরি করতেন শাহীনুর রহমানও। সেই সুবাদে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। সবুজ বার্নাড মাঝে মধ্যে শাহীনুরের  বাসায়ও যেতেন।

এভাবে যাওয়া-আসার সুযেগে শাহীনুরের স্ত্রীকে প্রায়ই প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাব দিতেন সবুজ বার্নাড। কিন্তু সেই প্রস্তাব প্রত্যাখান করে শাহিনুরকে তা বলে দিতেন তার স্ত্রী। এ নিয়ে সবুজ বার্নাডের ওপর ক্ষিপ্ত হন শাহিনুর। এ অবস্থায় গত ২৮ সেপ্টেম্বর ভিকটিমের সঙ্গে আসামির পানজোড়া এলাকায় দেখা হয়। তখন শাহিনুর নতুন চাকরি পাওয়ায় পার্টি দিতে বলেন সবুজ বার্নাড। এতে রাজি হয়ে সবুজকে এক হাজার টাকা দিয়ে মদ নিয়ে আসতে বলেন শাহিনুর। পরে সবুজ মদ নিয়ে শাহিনুরের বাসায় আসে। এরপর মদ পানের এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া ও মারামারি হয়। এক পর্যায়ে শাহিনুর ক্ষিপ্ত হয়ে সবুজ বার্নাডের বুকে ঘুষি মারেন। এতে ঘটনাস্থলে তিনি মারা যান। মরদেহ গুমের জন্য কেটে ৮ টুকরো করে বস্তায় ভরে ওই দিন রাতে খাটের নিচে রেখে দেন শাহিনুর। পরের দিন স্ত্রী গার্মেন্টে যাওয়ার পর মরদেহের টুকরোগুলো আলাদা আলাদা বস্তায় ভরে পানজোড়া এলাকার বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেন।

এদিকে সবুজ বার্নাড বাসায় না ফেরায় তার বাবা কালীগঞ্জ থানায় জিডি করেন। পরে ১ অক্টোবর সকালে সবুজ বার্নাডের কর্মস্থল পূর্বাচল অ্যাপারেলের পাশে লোকজন শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন দুটি হাত দেখতে পায়। এসময় পুলিশ ও স্থানীয়রা আশপাশে খোঁজাখুঁজি করে কোমর থেকে হাটু পর্যন্ত অংশ, পায়ের দুটি খণ্ডিত অংশ, গলা থেকে  বিচ্ছিন্ন মাথা ও কোমর হতে গলার অংশসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ উদ্ধার করে।

পরে ভিকটিমের বাবা অমূল্য গনসালভেস বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানার মামলা করেন। এঘটনায় গাজীপুর পিবিআই ছায়া তদন্ত শুরু করে। পরে গত ২ অক্টোবর খুলনার সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে আসামি শাহিনুর রহমানকে গ্রেফতার করে ৩ অক্টোবর গাজীপুর আদালতে সোপর্দ করে। এ সময় শাহিনুর হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৮, অক্টোবর ৪, ২০২২।
আরএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।