কক্সবাজার: বিজয়া দশমীতে দুর্গা দেবীর প্রতিমা বিসর্জনকে ঘিরে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে লাখো পর্যটকের ঢল নেমেছে।
বুধবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে শুভ বিজয়ার এ উৎসব হয়ে ওঠে সম্প্রীতির মিলনমেলা।
আয়োজকরা জানান, শুধু সৈকতের লাবনী পয়েন্টে এ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা শতাধিক প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হচ্ছে। একই সময়ে কক্সবাজারের রামুর বাঁকখাল নদী, চকরিয়ার মাতামুহুরী, টেকনাফের সাগর ও নাফনদী, উখিয়ার ইনানী সৈকত ও রেজুনদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে।
জেলা পূজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বেন্টু দাশ জানান, এবারে জেলায় ১৪৮টি মণ্ডপে প্রতিমাপূজা আর ১৫৮টিতে ঘটপূজার আয়োজন ছিল।
প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানকে ঘিরে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে দুপুর ২টার পর থেকে জেলার উখিয়া, টেকনাফ, সদর, ঈদগাঁও, চৌফলদণ্ডী ছাড়াও নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে শোভাযাত্রা সহকারে প্রতিমা আসতে শুরু করে। ট্রাকে ট্রাকে আসা প্রতিমায় ভরে যায় অনুষ্ঠানস্থল।
বিকেল প্রায় সাড়ে ৫টা পর্যন্ত সৈকতের বালুচরে রাখা দুর্গা প্রতিমা ঘিরে চলে ভক্তদের শেষ আরাধনা। নাচে-গানে আনন্দমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয় বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকতে। অনুষ্ঠানকে ঘিরে সমাগম ঘটে পর্যটকসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লাখো মানুষের।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবনী পয়েন্টের উন্মুক্ত মঞ্চে বিজয়া সম্মেলন শুরু হয় বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে। সৈকতের বালিয়াড়িতে বিদায় অঞ্জলি প্রদান চলে বিকেল ৫টার পরেও।
কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি উজ্জ্বল কর জানান, কক্সবাজারে এবার প্রতিমা পূজা ছিল ১৪৮টি। এর মধ্যে ১১০টি মণ্ডপের প্রতিমা সৈকতের লাবনী পয়েন্টে আনা হয়েছিল। এর পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী উপজেলা থেকে আনা হয় আরও অনন্ত ৪০টি প্রতিমা। ফলে দেড় শতাধিক প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানটি হয়ে ওঠে দেশের সবচেয়ে বড় প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান।
কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বেন্টু দাশ জানান, সৈকতের প্রতিমা বিসর্জন ঘিরে আগত পর্যটকসহ ২ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি। সকল ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণে যেটি হয়ে ওঠে সম্প্রীতির মিলনমেলা।
প্রতিমা বিসর্জন ঘিরে আয়োজিত বিজয়া সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, এখানে সেটি আবার প্রমাণিত হয়েছে। এই উন্নয়নশীল বাংলাদেশে একটা সময় সম্প্রদায়িকতার যারা বীজ বুনে অপতৎপরতা চালিয়েছিল, তারা চিহ্নিত হয়েছে। এদের বয়কট করে জাতি এখন ঐক্যবদ্ধ।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি উজ্জ্বল করের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মামুনুর রশিদ, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মজিবুর রহমান, ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০২২
এসবি/এমজেএফ