ঝালকাঠি: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা ঝালকাঠিতে ঝড়ো হাওয়া, জ্বলোচ্ছাস ও ভারী বৃষ্টি হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে গাছ উপড়ে অনেকের বসতঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় শীতকালীন আগাম সবজির মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।
ঝড়ের প্রভাবে সুগন্ধা ও বিশখালী নদীতে অন্তত তিন থেকে পাঁচ ফুট পানি বেড়েছে। ফলে জেলা সদরের দিয়াকুল কিস্তাকাঠি, কিফাইতনগর, লঞ্চঘাট এলাকা, কলাবাগান, বারইকরণ, ভবানিপুর, রাজাপুর উপজেলার চল্লিশ কাহনিয়া, বড়ইয়া, পালট, কাচারীবাড়ি, কাঠালিয়ার সদর এলাকা, শৌলজালিয়া, কচুয়া, আমুয়াসহ অন্তত ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে কয়েকশ কৃষি ক্ষেত ও মাছের ঘের। নিচু এলাকার বসতঘরে পানি ঢুকেছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে।
সদর উপজেলার দিয়াকূল গ্রামের বাসিন্দারা জানান, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ঘরে স্যাঁতসেঁতে অবস্থা হয়েছে। বসবাসের অনুপযোগী হয়ে গেছে। রান্নাঘর পানিতে তলিয় যাওয়ায় চুলায় আগুন জ্বালানোরও সুযোগ নেই।
পশ্চিম দেউরী এলাকার বাসিন্দারা বলেন, আমরা কৃষি কাজ করে পেট চালাই। এজন্য শীতকালীন আগাম কিছু শাক-শবজি চাষ করছিলাম। কিন্তু এই বৃষ্টি-বন্যায় সব শেষ হয়ে গেছে। কয়েক হাজার টাকার কৃষি পণ্য নষ্ট হওয়ায় চোখে অন্ধকার দেখছি।
ঝালকাঠিতে বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রহিম মিয়া জানিয়েছেন, ঝালকাঠি-বরিশাল মহাসড়কের আমিরাবাদ এলাকায় ৩৩ হাজার কেভি লাইনের ওপর গাছ পড়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। এছাড়া সিত্রাংয়ের তাণ্ডবে বিভিন্ন এলাকায় গাছ ও গাছের ডালপালা ভেঙে বিদ্যুতের লাইন ও খুঁটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলো মেরামতে কাজ চলছে। মঙ্গলবার দুপুর পর মধ্যে জেলা শহরসহ চার উপজেলার সদর এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হয়েছে। পুরো জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করতে তাদের অন্তত দুই দিন সময় লাগবে।
জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী জানান, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে অন্যান্য জেলার মতো ঝালকাঠিতেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।
বাংরাদেশ সময়: ১৮৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২২
এমএমজেড