ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

‘পাঠ্যপুস্তকে কাল্পনিক ও বিকৃত ইতিহাস জাতির ধ্বংস ডেকে আনবে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২৩
‘পাঠ্যপুস্তকে কাল্পনিক ও বিকৃত ইতিহাস জাতির ধ্বংস ডেকে আনবে’

ঢাকা: পাঠ্যপুস্তকে কাল্পনিক ও বিকৃত ইতিহাস জাতির ধ্বংস ডেকে আনবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইসলামি ফ্রন্টের মহাসচিব স উ ম আবদুস সামাদ।  

তিনি বলেন, শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড।

অবশ্যই তা সু-শিক্ষা। শিক্ষার প্রধান উপকরণ হলো পাঠ্যপুস্তক। আর সেই পাঠ্যপুস্তকে আধুনিকতার নামের অশ্লীলতা দিয়ে, ধর্মহীনতা কিংবা ধর্মীয় রীতি-নীতিকে উপেক্ষা করে কখনোই জাতিকে সু-শিক্ষিত করা যায় না। বরং কাল্পনিক ও বিকৃত ইতিহাস জাতির ধ্বংসে ডেকে আনবে।

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে 'পাঠ্যপুস্তকে ভুল তথ্য: একটি পর্যালোচনা' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

ইসলামি ফ্রন্টের মহাসচিব বলেন, বর্তমান সরকার জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থাকে আধুনিকীকরণ এবং বিশ্বের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সাধারণ শিক্ষাক্রমে এমন কিছু থাকবে না, যাতে দেশের বেশিরভাগ জনগণের ঈমান, আকীদা, মননশীলতা, সামাজিক ধ্যান-ধারণার সঙ্গে বৈপরীত্য দেখা দেয় এবং মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থার স্বকীয়তা বজায় রেখে আধুনিকীকরণ করা হবে।  

তিনি বলেন, একটি মহল নাস্তিক্যবাদের বীজ বপন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। প্রগতিশীলতার নামে তারা নাস্তিক্যবাদের প্রতি অতি উৎসাহী। যার প্রতিফলন ঘটেছে ২০২৩ সালের পাঠ্যপুস্তকে। যার ফলশ্রুতিতে আমরা দেখছি, মুসলিম প্রধান এই বাংলাদেশে কুরআন, সুন্নাহর বিষয়গুলো অনেকাংশেই উপেক্ষিত।

অধ্যক্ষ স উ ম আবদুস সামাদ আরও বলেন, ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর জন্য একটি গোষ্ঠী পাঠ্যপুস্তকে বিকৃত ইতিহাস, কাল্পনিক ছবি, আশরাফুল মাখলুকাত মানুষকে বানর থেকে সৃষ্টি এবং অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ের অবতারণা করেছে, যা জাতিকে চরমভাবে বিভ্রান্ত করছে।

এ সময় পাঠ্যপুস্তক নিয়ে ৮ দফা উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সেগুলো হলো-

১) বিবর্তনবাদের মতো কুরআন বিরোধী কুফরি তথ্য শিখে শিক্ষার্থীদের ধর্মান্তরিত হওয়ার পথ সুগম হবে।

২) ট্রান্সজেন্ডারের মতো ঘৃণিত পদ্ধতির প্রতি শিক্ষার্থীরা আকৃষ্ট হবে।

৩) মুসলিম শিক্ষার্থীরা ইসলামের মৌলিক বিষয় তাওহিদ শিক্ষার পরিবর্তে বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজার প্রতি আকৃষ্ট ও বহু ঈশ্বরবাদী হয়ে উঠবে।

৪) ইসলামি পরিভাষার পরিবর্তে দেব-দেবী ইত্যাদি পরিভাষাগুলো মুসলিম শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠবে এবং ভবিষ্যতে তাদের ইসলাম বিমুখতার পথ প্রশস্ত হবে।

৫) ইসলাম ও মুসলিম রাজা-বাদশাদের ব্যাপারে ঘৃণা তৈরী হবে এবং বিকৃত ইতিহাস শিখবে।

৬) ইসলাম ধর্মে নিষিদ্ধ এমন বাদ্যযন্ত্রের প্রতি মুসলিম শিক্ষার্থীরা আকৃষ্ট হবে।

৭) পর্দা, টুপি ও দাড়ির মতো ধর্মীয় বিষয়গুলোর প্রতি শিক্ষার্থীদের ঘৃণা তৈরি হবে।

৮) শান্তিপূর্ণ এই বাংলাদেশে উগ্রবাদী মানুষের ধর্মীয় সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা তৈরি করার পথ সুগম হবে।

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আত বাংলাদেশের আয়োজনে এই গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন, অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুল আলিম রেজভী।

এতে আরও উপস্থিত ছিলেন গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশের যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট মোসাহেব উদ্দিন বখতিয়ার, কলামিস্ট শাইখ উসমান গনী, আহলে সুন্নাতের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মুজাফফর আহমদ মুজাদ্দেদী, কাজী সমিতির যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট কাজী মুহাম্মদ ইসলাম উদ্দিন দুলাল প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ০০৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২৩
ইএসএস/এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।