ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

যে কারণে বিএনপি থেকে বহিষ্কার হলেন শওকত মাহমুদ

মহসিন হোসেন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩১ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২৩
যে কারণে বিএনপি থেকে বহিষ্কার হলেন শওকত মাহমুদ

ঢাকা: গত ১৬ মার্চ রাজধানীর বনানীতে হোটেল শেরাটনে জাতীয় ইনসাফ কমিটির (ন্যাশনাল কমিটি ফর সিভিল রাইটস) এক অনুষ্ঠান হয়। সেখানে সংগঠনের আহ্বায়ক ফরহাদ মজহার ও সদস্য সচিব হিসেবে শওকত মাহমুদ বক্তব্য দেন।

জাতীয় ইনসাফ কমিটি গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করে নতুন সংবিধান প্রণয়ন ও তার অধীনে জাতীয় নির্বাচন করবে বলে জানায়। বিষয়টি ভালো চোখে দেখছেন না বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ফলে তার নির্দেশে সরাসরি বহিষ্কার করা হলো শওকত মাহমুদকে।

জানা গেছে,  সোমবার (২০ মার্চ) রাতে দলের স্থায়ী কমিটির ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয়।

বহিষ্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে শওকত মাহমুদ বলেন বাংলানিউজকে বলেন, এটা (বহিষ্কারাদেশ) দুঃখজনক। এর বাইরে এখন কিছু বলতে চাই না।

এর আগে একবার আপনাকে শোকজ করেছিল সেটার কি হলো?  জবাবে তিনি বলেন, শোকজের জবাব দিয়েছিলাম, তারপর দল থেকে আর কিছু জানায়নি।  

জাতীয় ইনসাফ কমিটি একটি সামাজিক সংগঠন বলে জানান তিনি।  

সাংবাদিক শওকত মাহমুদ জাতীয় প্রেসক্লাবের দুই দফা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এছাড়া বিএনপি সমর্থিত ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নেরও সভাপতি ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

সাংবাদিক থেকে বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত হন ২০০৯ সালে। বিএনপিতে যোগ দিয়েই তিনি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হন। ২০১৬ সালে ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে শওকত মাহমুদ দলের ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

শওকত মাহমুদ বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর ২০১৫ সালে গ্রেফতার হয়ে একবছরের বেশি সময় কারাবাস করেন। তার বিরুদ্ধে ৬০টির অধিক মামলা রয়েছে।

গত বছরের এপ্রিলে দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে দলের ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদকে শোকজ করে বিএনপি। ওই সময় পেশাজীবী সমাজের ব্যানারে একটি সমাবেশ থেকে তিনি সরকার পতনের ডাক দিয়েছিলেন। বিএনপির ভাষ্য, ওই সমাবেশের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক ছিল না।

২০১৯ এবং ২০২০ সালেও ঢাকায় সরকার বিরোধী দুইটি বড় জমায়েত হয়েছিল। এর পেছনেও শওকত মাহমুদ ছিলেন বলে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় বিএনপি। ওই সময়ে আরেক ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদকেও কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল।

বিএনপির নেতারা মনে করেন, সরকার পতনের আন্দোলনের নামে এ ধরনের তৎপরতার পেছনে সরকারের ষড়যন্ত্র রয়েছে। এ কারণে দলের উচ্চ পর্যায় থেকে অনেককে ফোন করে ওই সমাবেশে যেতে নিষেধ করা হয়।

তেমনিভাবে গত ১৬ মার্চ জাতীয় ইনসাফ কমিটির নামে হোটেল শেরাটনে নৈশভোজের আমন্ত্রণ ও জাতীয় সরকার গঠনের বিষয়টি ভালো চোখে দেখেননি দলের সিনিয়র নেতারা। তাৎক্ষণিক এ সংবাদ লন্ডনেও পৌঁছে যায় এবং বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত আসে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৩০ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২৩
এমএইচ/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।