ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

শ্রমিকদের ক্রীতদাস হওয়া থেকে রক্ষা করতে হবে: জিএম কাদের

সিনিয়র করেসপন্ডেট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০০ ঘণ্টা, মে ১, ২০২৩
শ্রমিকদের ক্রীতদাস হওয়া থেকে রক্ষা করতে হবে: জিএম কাদের

ঢাকা: জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের বলেছেন, আমাদের দেশের শ্রমিকরা এখন ক্রীতদাস। ক্রীতদাসদের বাঁচিয়ে রাখা হয় শুধু কাজ করার জন্য, সেভাবেই আমাদের শ্রমিকদের বাঁচিয়ে রাখা হচ্ছে।

শ্রমিকদের রক্ত চুষে খাচ্ছেন মালিকরা। ক্রীতদাসত্ব থেকে শ্রমিকদের রক্ষা করতে হবে। শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য আইন আছে কিন্তু তার বাস্তবায়ন নেই। শ্রমিকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আইন বাস্তবায়নে সরকারের কোনো আন্তরিকতাও নেই।

সোমবার (১ মে) দুপুরে রাজধানীর বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে মহান মে দিবস উপলক্ষে জাতীয় শ্রমিক পার্টি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

জাপা প্রধান বলেন, অীততে সরকারি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক সংগঠনগুলো শক্তিশালী ছিল। বর্তমানে সরকার দলীয় নেতা-কর্মীরা শ্রমিকদের স্বার্থ কুক্ষিগত করছে। তারাও শ্রমিকদের অধিকার বঞ্চিত করে নিজেরা ফায়দা লুটছে। আইন অনুযায়ী শ্রমিকরা অধিকার পাচ্ছে না। সমতা ভিত্তিক ও ন্যায়বিচার ভিত্তিক সমাজ গড়ার সংগ্রামে শ্রমিক শ্রেণিকে এগিয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, সংসদে আমরা কথা বলতে পারি। সংসদে আমরা অনেক দাবি করি, সরকার সে দাবি মানলে আমাদের ভোট ও জনপ্রিয়তা বেড়ে যাবে। এ কারণেও সরকার বিরোধীদলের কথা শোনেন না। এভাবেই দেশ চলছে।

তিনি আরও বলেন, এখন দেশের মানুষের আইনগত অধিকার নেই। দেশের মানুষের ফোন ও গতিবিধি নজরদারি করা হচ্ছে। এটা করার অধিকার কারোরই নেই। কিন্তু সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। মানুষের কথা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে, লেখার অধিকার নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। সংবাদ নিয়ন্ত্রণের জন্য আইন তৈরি করা হচ্ছে। খুন-গুমের মাধ্যমে মানুষের বাঁচার অধিকার হরণ করা হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। আগামী দিনে অনেক বড় সংগ্রাম আছে, এই সংগ্রামে জিততে হবে।

জিএম কাদের বলেন, মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে বাংলাদেশের শ্রমিক শ্রেনির গৌরবময় ঐতিহ্য আছে। মানুষের ভোটের অধিকার রক্ষার আন্দোলনেও শ্রমিকদের গৌরবোজ্জল ভূমিকা ছিল। যদিও পরে অধিকার আদায়ের সংগ্রামে ছাত্ররা এগিয়ে এলেও প্রধান চালিকা শক্তি ছিল শ্রমিক শ্রেণিই। স্বাধীনতা সংগ্রামসহ প্রতিটি আন্দোলনে শ্রমিকদের অবদান গৌরবোজ্জল। সরকার সব সময় মালিকদের মাথায় তেল দিচ্ছে। দুঃখের বিষয় আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আমাদের বলে শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা করো। ১৮৮৬ সালে আমেরিকার শ্রমিকরা আন্দোলন করতে পেরেছিল, রাস্তায় নামতে পেরেছিল। কিন্তু এখন আমাদের দেশের শ্রমিকরা আন্দোলন করতে পারে না, রাস্তায় নামতে পারে না। সেই সময়ের চেয়ে বাংলাদেশের শ্রমিকদের অবস্থা এখন কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেশি খারাপ।

আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেন, শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ রক্ষায় পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ যে রেকর্ড গড়েছেন এখনো কেউ তা ভাঙতে পারেনি। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তাদের চরিত্র এক হয়ে যায়। দেশের মানুষ এই দুটি দলের হাত থেকে বাঁচতে জাতীয় পার্টির দিকে তাকিয়ে আছে।

জাতীয় শ্রমিক পার্টির সভাপতি একেএম আশরাফুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেনের পরিচালনায় মহান মে দিবসের আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জাপা প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তফা আল মাহমুদ, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু। জাতীয় শ্রমিক পার্টির আব্বাস আলী মন্ডল, মোয়াজ্জেম হোসেন, আব্দুস সাত্তার, তোফাজ্জেল হোসেন তোফা, মিনহাজ আবেদীন বিশাল, আব্দুল মান্নান মিলন, ফজর আলী জাকির, শামীম শেখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৯ ঘণ্টা, মে ১, ২০২৩
এসএমএকে/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।