চাঁপাইনবাবগঞ্জ: সাবেক যুবলীগ নেতা ও সাবেক শিবগঞ্জ পৌর কাউন্সিলর খাইরুল আলম জেম হত্যা মামলার প্রধান আসামি চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোখলেসুর রহমানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
উচ্চ আদালতে পাওয়া চার সপ্তাহের জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় মঙ্গলবার (০৬ জুন) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এ আবার জামিন আবেদন করলে শুনানি শেষে বিচারক নির্মলেন্দু দাশ তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
একই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনপ্রাপ্তরা এর আগে গত ৩০ মে নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলেও প্রধান আসামি মোখলেসুর রহমান অসুস্থতার কথা জানিয়ে সেদিন আদালতে হাজিরা দেননি।
পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) নাজমুল আজম জানান, জেম হত্যা মামলার প্রধান আসামি মঙ্গলবার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে তার জামিন বাতিলের বিষয়টি আমরা তুলে ধরি। পরে আদালত বিচার-বিশ্লেষণ করে জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
তিনি আরও জানান, মামলার মোট ৪৮ জন আসামির মধ্যে মেয়র মোখলেসুর রহমানসহ ৩৪ জন উচ্চ আদালতে ৩ মে থেকে ৩০ মে পর্যন্ত জামিন পান। জামিনের মেয়াদ তাদের শেষ হলে মেয়র ও আরেক আসামি বাদে বাকি ৩২ জন গত ৩০ মে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। পরে আদালতের বিচারক ২৬ জনের জামিন বহাল রাখেন এবং ছয়জনের জামিন না মঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ ঘটনায় জেলহাজতে থাকা পাঁচ আসামি ১৬৪ ধারায় ১২ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা এ হত্যায় ১২ জনের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী নজরুল ইসলাম বলেন, গত ৩০ মে আদালতে উপস্থিত হয়ে আত্মসমর্পণ করার কথা থাকলেও মোখলেসুর রহমান অসুস্থ থাকায় উপস্থিত হতে পারেননি। সুস্থ হওয়ার পরই আজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন তিনি।
এ মামলায় কারান্তরীণ আসামিরা হলেন- গত চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের উপ-নির্বাচনে সংসদ সদস্য পদে অংশ নেওয়া প্রার্থী ও বহিষ্কৃত জেলা যুবলীগের সভাপতি সামিউল হক লিটন, চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহীদ রানা টিপু, আব্দুল কাদের, আলমগীর হোসেন, জামিল হোসেন এবং মাহিন রেজা ওরফে মুমিন।
গত ১৯ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জের উদয়ন মোড়ে ইফতার কেনার সময় খাইরুল আলম জেমকে দেশি-বিদেশি ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করা হয়। স্থানীয়রা এ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে সেখান থেকে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
হত্যাকাণ্ডের তিনদিন পর গত ২২ এপ্রিল রাত ২টার দিকে খাইরুল আলম জেমের বড় ভাই মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র, দুই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ ৪৮ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৩ ঘণ্টা, জুন ৬, ২০২৩
এসআই