ঢাকা: নির্বাচন প্রাক পর্যবেক্ষণে আসা মার্কিন প্রতিনিধিদল আওয়ামী লীগের সবকিছুতেই সন্তুষ্ট। তারা দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও সহিংসতামুক্ত দেখতে চায়।
এ কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) সচিবালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও বেসামরিক জনগণের নিরাপত্তাবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়ারের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মার্কিন প্রতিনিধিদল আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও সহিংসতামুক্ত দেখতে চায়। তারা আমাদের সবকিছুতেই সন্তুষ্ট। আমরা তাদের বলেছি- আমাদের নির্বাচন সংবিধান অনুসারে ইলেকশন কমিশনের তত্ত্বাবধানে হবে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তার অধীনেই থাকবে। নির্বাচন কমিশন যেভাবে নির্দেশনা দেবে সেভাবেই তারা কাজ করবে।
মার্কিন প্রতিনিধি দলের সাথে আমাদের খোলামেলা আলাপ হয়েছে। তারা বারবার বলেছেন, তারা কোনো দল কিংবা ব্যক্তিকে সমর্থন করতে এখানে আসেননি। বাংলাদেশ এখন যে অবস্থায় আছে সে অবস্থা নিয়ে তারা খুব খুশি। বুধবার দুই দলের যে বড় একটি শান্তিপূর্ণ সহবস্থান ছিল সেটা নিয়েও তারা প্রশংসা করেছেন।
তিনি বলেন, আমাদের ল এনফোর্সমেন্ট ফোর্সের সবই তৈরি আছে। এছাড়া ল এনফোর্সমেন্ট ফোর্সের স্পেশাল কিছু বাহিনীকে তারা যে সহযোগিতা করেছে, প্রশিক্ষণ দিয়েছে, অস্ত্র দিয়েছে সে বিষয়েও মনে করিয়ে দিয়েছি। এটিই ছিল আজকের কথার মূল সারমর্ম।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমাদের দেশে আমেরিকান হাইপাওয়ার একটা টিম এসেছে (আজরা জেয়া, ডোনাল্ড লু এবং মার্কিন রাষ্ট্রদূতসহ আরও কয়েকজন)। আমাদের এখানে আসার আগে তারা আইনমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে, সেটি তারা আমাদের জানিয়েছেন। শেখ হাসিনা যে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তিনি তার ভিশনারি নেতৃত্বে দেশকে সমৃদ্ধের পথে নিয়ে গিয়েছেন, এতে তারা সন্তুষ্ট।
আমাদের সঙ্গে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কথা হয়েছে। কত তাড়াতাড়ি এ সমস্যার সমাধান করা যায়, সেটি নিয়ে আলাপ হয়েছে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নিয়ে যে মানব পাচারকারীরা খেলাধুলা করছে, সেটা যাতে না করতে পারে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে আমি তাদের সহযোগিতা চেয়েছি। তারা বলেছেন, এ ক্ষেত্রে সবসময় তারা আমাদের পাশে আছেন। আমরা বলেছি, মানব পাচাররোধে আমরা টায়ার থ্রি থেকে টায়ার টুতে এসেছি। এটি তাদেরই মূল্যায়ন। সে জন্য তারা প্রশংসা করেছেন। মোটামুটি আলোচনা হয়েছে ফলপ্রসূ আন্তরিক পরিবেশে। তারা সবকিছু নিয়ে সন্তুষ্ট।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) বিষয়ে আলোচনা কিনা, সাংবাদিকরা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, না। এ বিষয়ে কোনো কথা হয়নি।
নির্বাচনকে তারা অংশগ্রহণমূলক চেয়েছেন কিনা? উত্তরে তিনি জানান, অংশগ্রহণমূলক না, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চেয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবসময় তৈরি, তারা সুপ্রশিক্ষিত। তাদের যুক্তরাষ্ট্র অনেক কিছু দিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এতে তারা উজ্জীবিত। এরইমধ্যে অনেকগুলো শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনও সেই রকম শান্তিপূর্ণ হবে বলে সরকার আশা করে।
বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করে আন্দোলন করছে। এ বিষয়ে কোনো আলাপ হয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, না, এ বিষয়ে কোনো আলাপ হয়নি। প্রসঙ্গই আসেনি। তারা এতটুকু বলেছেন, তারা কোনো দলকে এনকারেজ (উদ্দীপ্ত) করতে এখানে আসেননি। তারা কোনো দলকে সমর্থন করেন না। তারা এসেছেন, এখানে যাতে সহিংসতামুক্ত ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়। এর বাইরে তারা কিছু চাচ্ছেন না, কিছু বলেনওনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২৩
জিসিজি/এমজে