ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা চাপাবাজি করে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করার একটি ডিমও এখন অবশিষ্ট নেই। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে তাদের জন্য কেউ আর ‘টিকটিকি’র ডিম’ নিয়ে আসবে না।
বুধবার (১৯ জুলাই) রাতে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, কুটনৈতিক ভাষা ওবায়দুল কাদের সাহেবরা বোঝেন না বলেই ‘ন’—কে ‘ণ’ মনে করেন। 'ক'-কে 'খ' মনে করেন। তাই মিথ্যাচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করা যাবে না।
রিজভী বলেন, বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর পদযাত্রা কর্মসূচির সাফল্যে জনগণের রায় প্রতিফলিত হয়েছে। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পক্ষে জনগণের রায় ঘোষিত হয়েছে এই কর্মসূচিতে। গতকাল ঢাকাসহ সারাদেশে পদযাত্রা ও আজকের ঢাকা মহানগরের পদযাত্রায় বাঁধভাঙা স্রোতের মতো সর্বস্তরের মানুষের সমাগম ঘটে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে মানুষের বিশাল মিছিল গোটা মহানগরী প্রদক্ষিণ করে। এই পদযাত্রার বিশাল পরিসর দেখে আওয়ামী নেতা—মন্ত্রীরা জ্বরের ঘোরের মতো বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।
বিএনপির এই মুখপাত্র অভিযোগ করে বলেন, লক্ষ্মীপুর জেলার পদযাত্রা কর্মসূচিতে কৃষকদল নেতা সজীব হাসান গুলিতে নিহত হন। অস্ত্রের আঘাতে জখম ও পঙ্গু করা হয়েছে কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে। এরা কারবালার ইয়াজিদ বাহিনীর ফোরাত তীর অবরোধের মতো কয়েকটি মহানগর ও জেলা সদরে অবরোধ করে। বিএনপির পদযাত্রা এগিয়ে গেলে এরা নিষ্ঠুর কায়দায় ধারালো অস্ত্র নিয়ে নেতাকর্মীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এদের সঙ্গে যোগ দেয় আওয়ামী চেতনায় লালিত পুলিশ বাহিনীর বেশকিছু সদস্য।
রিজভী বলেন, আগামী নির্বাচন নিদর্লীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হবে, শেখ হাসিনার অধীনে নয়, এটিই বাংলাদেশের জনগণের ভাষা। এবার এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কারণ এরা বিরোধী দল, মুক্ত সংবাদপত্র ও স্বাধীন মত প্রকাশে বিশ্বাসী মানুষদের ওপর গুন্ডামি করে এসেছে।
লক্ষীপুরে কৃষকদল নেতা সজীব হোসেনকে হত্যাসহ সারাদেশব্যাপী অসংখ্য নেতাকর্মীকে আওয়ামী সন্ত্রাসী ও পুলিশের হামলায় আহত হওয়ার ঘটনার সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, দিনাজপুরে আজ বিএনপি’র শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচিতে হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নৌ পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালেদ মাহমুদ চৌধুরীর নির্দেশে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা রংপুর, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, পঞ্চগড় ও সৈয়দপুরে বিএনপি নেতাকর্মীদের বহনকারী গাড়িতে হামলা চালিয়ে প্রায় শতাধিক গাড়ি ভাঙচুর করে। এ সময় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় দেড়শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন।
১৮ ও ১৯ জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচিতে আহত, নিহত ও গুলিবিদ্ধ হওয়ার সংখ্যা জানিয়ে তিনি বলেন, আহত প্রায় ৩ হাজার, নিহত একজন, গুলিবিদ্ধ প্রায় ২ হাজারের অধিক। এছাড়া গত ১৯ মে হতে অদ্যাবধি পর্যন্ত বিএনপি’র কেন্দ্র ঘোষিত জনসমাবেশকে কেন্দ্র করে সারাদেশের প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী মোট মামলা ৩১০টি, মোট গ্রেপ্তার ১৩০০টি, মোট আসামি প্রায় ১১ হাজারের অধিক নেতাকর্মী।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০২৩
টিএ/ এসএম