ঢাকা: স্বাধীনতাবিরোধী চক্র আবারও শেখ হাসিনাকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে বলে উল্লেখ করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর বীর প্রতীক।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ব্লক অডিটোরিয়ামে একটি আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
গাজী গোলাম দস্তগীর বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে আমাদের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের প্রথম সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছিলেন। এটি ছিল একটি ঐতিহাসিক দিন। পচাত্তরের আগস্টে আমরা তাকে হারাই। দীর্ঘদিন পর বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসলেন। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা আলোর মুখ দেখতে পেলাম। দীর্ঘ ২১ বছর যখন স্বাধীনতা বিরোধীরা ক্ষমতায় ছিল, আমরা মুক্তিযোদ্ধারা সার্টিফিকেট প্রদর্শন করতে পারিনি। মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট লুকিয়ে রাখতে হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধার কথা বললে চাকরি দেওয়া হতো না। এ সময় মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর হামলার পর হামলা পরিচালিত হয়েছিল।
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, আবারও স্বাধীনতা বিরোধীরা সংগঠিত হচ্ছে। যেসব দেশ মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল, স্বাধীনতা বিরোধীরা তাদের সঙ্গে আবার হাত মিলিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। স্বাধীনতা বিরোধী চক্র আবারও শেখ হাসিনাকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে। মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানেরা এখন যুবক, তাদের এ ষড়য়ন্ত্র নামক রাজনৈতিক যুদ্ধ করতে হবে। কারণ আমাদের বয়স হয়েছে। এ রাজনৈতিক যুদ্ধে যদি সফল না হন তবে, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের কোনো দাবি আদায় হবে না। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সদস্য সংখ্যা বাড়াতে হবে। জেলায় জেলায় এ ধরনের আয়োজন করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে স্বপ্ন ছিল, তা বাস্তবায়নের জন্য পরবর্তী প্রজন্মকে কাজ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, এদেশে রাজাকারদের সন্তানও রয়েছে। রাজকারের সন্তানেরা স্বাধীনতার বিরুদ্ধে, সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানেরা যদি একত্রে রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়ে, তবে যারা ষড়যন্ত্রকারী, অগ্নিসংযোগকারী, বঙ্গবন্ধুর আর্দশের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে তাদের রুখে দিতে পারবে।
দৈনিক ভোরের আকাশ পত্রিকার সম্পাদক একুশে পদকপ্রাপ্ত কণ্ঠযোদ্ধা ড.মনোরঞ্জন ঘোষাল মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতি তুলে ধরে আগামীর বাংলাদেশ সম্পর্কে বলেন, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের মতো তরুণ প্রজন্মের সামনে আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ অপেক্ষামাণ। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা ৭১ এর মতো এত কাজ করতে পারব না, কারণ আমাদের বয়স হয়েছে। তরুণ প্রজন্ম বিশেষ করে যারা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার মূলমন্ত্র এবং শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলা তাদের হাতে।
‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নই আমাদের অঙ্গীকার’স্লোগান নিয়ে 'চাকরিতে কোটা পুনর্বহাল ও দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে সরকার গঠনে মুক্তিযুদ্ধের ধারা অব্যাহত রাখার দৃঢ় প্রত্যয়ে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ সুরক্ষার নতুন প্রজন্মের করণীয় শীর্ষক এ আলোচনা সভা ও জেলা কনভেনশনের আয়োজন করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড।
স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র রচয়িতা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম এ কনভেনশনের উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাব-সেক্টর কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম (এসপি মাহবুব), রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী সিকদার, আমেনা নূর ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা আহম্মদ আল জামান (সিআইপি), নির্বাচিত জেলা কমান্ডার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী মোজাম্মেল হক, নির্বাচিত জেলা কমান্ডার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবু সাঈদ মিয়া ও মুক্তিযুদ্ধ সংহতি পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ পিন্টু।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মেহেদী হাসান।
সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০২৩
আরকেআর/জেএইচ