ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তাদের সঙ্গে আমাদের সহযোগিতা এবং বহুমাত্রিক সম্পর্ক দিন দিন দৃঢ় হচ্ছে। সুতরাং, কোনো একটা নীতি নিয়ে কারো পুলকিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।
রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) প্রীতিলতা ওয়েদ্দারের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট।
সভায় তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজকে বিএনপি নানা ধরনের কথা বলে। ভিসানীতি ঘোষণা করার পর এক ধরনের বলে, আবার পত্রিকায় খবর আসার পর আরেক ধরনের কথা বলে। এগুলো বলে কোনো লাভ নেই। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো। সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ সেটি প্রমাণ করে।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সময় বহু পরাশক্তি আমাদের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু সেই রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে, সেই ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে আমাদের পূর্বসূরী মুক্তিযোদ্ধারা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিল। আজকেও অনেকে চোখ রাঙায়, অনেক দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র হয়৷
গত ১৫ বছরে দেশের অগ্রগতির চাকাকে স্তব্ধ করার জন্য দেশের ভেতরে ও বাইরে বহু ষড়যন্ত্র হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এখনো বহু ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সমস্ত ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে দেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে। শেখ হাসিনা কোনো রক্তচক্ষুকে পরোয়া করেন না। সমস্ত ষড়যন্ত্রের বেড়াজালকে ছিন্ন করে তিনি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
বিএনপিকে স্বাধীনতা বিরোধীদের নতুন সংস্করণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকে দেশবিরোধী অপশক্তি, যারা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, তাদেরই নতুন সংস্করণ হচ্ছে বিএনপি এবং তাদের সহযোগী হচ্ছে জামায়াতে ইসলামী। যারা শুধু দেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেনি, বরং স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের হয়ে অস্ত্র ধরেছিল। তাই এই বিএনপি-জামায়াত চক্র আজকে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছে। আগামী নির্বাচনকে ভন্ডুল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
এসব ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে আগামী নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, সুষ্ঠু, অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনে যদি বিদেশি পর্যবেক্ষকরা আসে, আমরা তাদের স্বাগত জানাই। তবে কেউ না এলেও কোনো অসুবিধা নেই। এই নির্বাচন আমাদের, এই দেশ আমাদের, এখানে নির্বাচন কীভাবে হবে, সেটি আমরা ঠিক করব, কাউকে আমাদের গণতন্ত্র শেখাতে হবে না।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, যারা দেশে দেশে গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে, যাদের নিজের দেশে গণতন্ত্র হুমকির সম্মুখীন, যাদের দেশে পার্লামেন্ট ভবনে আক্রমণ হয়, তাদের আমাদেরকে গণতন্ত্র শেখাতে হবে না। আমাদের দেশ আমাদের। গণতান্ত্রিক রীতিনীতির চর্চা আমরা কীভাবে করতে হয়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অবশ্যই থাকবে।
প্রীতিলতা ও সূর্যসেনের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রীতিলতা যেভাবে আত্মাহুতি দিয়েছিল, এটি সমস্ত ভারতীয় মুক্তিকামী মানুষদের অনুপ্রাণিত করেছিল, উদ্বুদ্ধ করেছিল। প্রীতিলতা-সূর্যসেন যেভাবে দেশ মাতৃকার জন্য জীবন দিয়েছেন, সেটি ভারতীয় মুক্তির সংগ্রাম এবং আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রামে বারে বারে যুগে যুগে প্রেরণা জুগিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও জোগাবে। আজকে তাই প্রীতিলতা ও সূর্যসেনের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি কণ্ঠশিল্পী রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাড. বলরাম পোদ্দার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩
এসসি/এসএএইচ